কাসুন্দি রেস্তোরাঁয় মাংস নিয়ে তুলকালাম

কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্টের হোটেল কল্লোলের নিচে কাসুন্দি রেস্তোরাঁয় খাসির মাংস চেয়ে গরুর মাংস পেলেন এক নারী পর্যটক। তিনি খাসির মাংস অর্ডার করলে কিছুক্ষণ পরেই টেবিলে মাংস চলে আসে। কথার  ছলে সেই মাংস খেলে ফেললেন তিনি। খাওয়া শেষে যখন বিল দেয়া হলো সেখানে গরুর মাংস লেখা দেখে তিনি হতবাক হয়ে গেলেন। সাথে সাথেই বমি করলেন। কারণ গরুর মাংস খাওয়া তার ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী নিষিদ্ধ। বিষয়টির তাৎক্ষণিক প্রতিবাদও করলেন ওই নারী।

গতকাল শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে খাবার খেতে হোটেলে যান ওই নারী। 

তবে প্রতিবাদে কোন সুরাহা না হওয়ায় রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই নারী কর্মকর্তা সিলেটে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে কর্মরত রয়েছেন।

সে সময় রেস্তোরাঁয় থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, শনিবার রাতে এক নারী খাসির মাংস চাইলে তাকে না জানিয়ে গরুর মাংস খাওয়ান রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানতে পেরে ওই নারী বমি করেন এবং গরুর মাংস খাওয়ানোর কারণ জানতে চান। কিন্তু রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ দোষ স্বীকার না করে উল্টো ওই নারীর সাথে রূঢ় ব্যবহার করেন। প্রশাসনের আশ্রয় নেবেন জানালে রেস্তোরাঁর লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মালিকের সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলের ভালো সম্পর্ক আছে দাবি করে ভুক্তভোগী ওই নারীকে শাসান। পরে ওই নারী সেখান থেকে চলে যান। 

ভুক্তভোগী বলেন, আমি ছুটি কাটাতে কক্সবাজারে এসেছি। ওই রেস্তোরাঁর বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের কাছে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। 

এ বিষয় জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ও কাসুন্দি রেস্তোরাঁর মালিক ইমরান হাসান বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। যে ছেলেটা খাবার দিয়েছিল তাকে অব্যাহতি দিয়েছি। এছাড়া রেস্তোরাঁর ম্যানেজার ও পরিচালনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

ওই পর্যটককে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা বলে হুমকি দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি একটি অপপ্রচার। আমার সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলের সম্পর্ক আছে তা ঠিক, কিন্তু ওইদিনের ভুলটা আমাদের। কাজেই এখানে হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। উল্টো আমার ম্যানেজার, টেবিল বয় ওই পর্যটকের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছে। 

ক্ষমা চাইলে কেন অভিযোগ করবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাকে কেউ যদি শুয়োরের মাংস খাওয়াতো তাহলে এতক্ষণে আমি তুলকালাম করে ফেলতাম। তাই উনি অভিযোগ কেন, মামলাও করতে পারেন। এর জন্য যদি আমাকে কোথাও যেতে হয় তাহলে আমি যাব। আমি আমার ভুল স্বীকার করে শাস্তি মেনে নেব। 

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ওই নারী পর্যটক আমাদের কাছে একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //