বরিশাল আদালত চত্বরে ইয়াবা উদ্ধার নিয়ে রহস্য

বরিশাল আদালতে আত্মসমর্পণ করতে আসা শফিকুল ইসলাম করিম ওরফে শফিক খান নামের এক ব্যক্তির মোটরসাইকেলের সিটের নিচ থেকে রহস্যজনকভাবে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছেন কোর্ট পুলিশের একজন কনস্টেবল।

আদালত চত্বরে দায়িত্বে থাকা সাঈদ নামের নামের ওই পুলিশ কনস্টেবলের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির কামরুল ইসলামের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোটরসাইকেলের সিটের নিচে লুকানো ইয়াবা উদ্ধার করেন তিনি।

তবে পুলিশের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াই একজন পুলিশ কনস্টেবলের ইয়াবা উদ্ধার অভিযানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আটক শফিক খানের পক্ষের আইনজীবী এবং উপস্থিত ব্যক্তিরা।

আজ রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বর থেকে আটক শফিকুল ইসলাম করিম বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে উজিরপুর থানায় বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক বলেন, আমার পরিচালিত উজিরপুরের একটি মামলার ছয়জন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্যে শুনতে পারি একজনের মোটরসাইকেলের সিটের নিচ থেকে নাকি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

ঘটনা শুনেই আমি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির কামরুল ইসলামকে বিষয়টি অবগত করলে নাজির ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এরপর কোর্ট পুলিশের কনস্টেবল এবং নাজিরের সামনেই শফিক খান তার মোটরসাইকেলের সিট কভার খুলে দিলে সেখান থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। আর যেই পুলিশ ইয়াবা উদ্ধার করেছে তিনি নাকি উজিরপুরের সোর্সের মাধ্যমে ইয়াবা থাকার বিষয়টি জানতে পেরেছে। এসব বিষয় জানার পরে আমি নিজেই কোতয়ালী মডেল থানার ওসিকে ফোন করে জানালে পুলিশের একজন এডিসিসহ থানার একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

লস্কর নুরুল হক বলেন, পুলিশের কাছ থেকে যতটুকু শুনেছি তাতে মোটরসাইকেলের যেখান থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে চাইলে বাইরে থেকেও যে কেউ ইয়াবা রাখতে পারে। সে কারণে মোটরসাইকেল চালকই যে সেখানে ইয়াবা রেখেছে সেটা তদন্ত না করে বলা সম্ভব নয়।

এদিকে, অপর প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ঘটনার পর পরই আইনজীবী এবং উপস্থিত বিচারপ্রার্থীদের জেরার মুখে পড়েন পুলিশ কনস্টেবল সাঈদ। এসময় তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনেই জানান, আদালতের নাজির কামরুল ইসলাম তাকে জানিয়েছে মোটরসাইকেলের ছিটের নিচে ইয়াবা আছে। তার কাছ থেকে শুনেই মোটরসাইকেলটিতে তল্লাশি করেন বলে দাবি ওই পুলিশ কনস্টেবলের।

এদিকে, খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুল করিমসহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে মোটরসাইকেলসহ শফিক খানকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

একই সাথে ঘটনাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্তের জন্য কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি। যদিও এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে থানার ওসির সরকারি নম্বর ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //