সম্ভাবনা আছে, উদ্যোগ নেই

পাহাড়ি জেলা হওয়ার কারণে পর্যটনশিল্পে বিনিয়োগ না করার প্রচলন রাঙ্গামাটিতে দীর্ঘদিনের। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্র চালু হলেও সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, মেগা-প্রকল্প পাস হলে এই সংকটের সমাধান হবে বলে মনে করছে জেলা পরিষদ।

জেলা প্রশাসনের রাঙ্গামাটি পার্ক, ডিসি বাংলো পার্কে, সেনাবাহিনীর আরণ্যক, পুলিশের পলওয়েল পার্ক ছাড়াও রাঙ্গামাটিতে বিগত সময়ে যেসব পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠেছে সেগুলো কেবল রেস্টুরেন্ট নির্ভর। রেস্টুরেন্টকেন্দ্রিক পর্যটনকেন্দ্রের যাত্রা শুরু হলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক পর্যটনখাতের হস্তান্তরিত বিভাগ জেলা পরিষদের আন্তরিক নেই বলে অভিযোগ।

রাঙ্গামাটির রাইন্যা টুগুন ইকো রিসোর্টের মালিক ললিত সি. চাকমা বলেন, সরকার দুইভাবে পর্যটন উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে পারেন। একটি ঋণ দিয়ে, আরেকটি অবকাঠামো উন্নয়ন করে। কিন্তু এখানে কোনোটাই হচ্ছে না। একটা পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য রাস্তা করে দিলে সেটা কেবল পর্যটনকেন্দ্রের নয় পর্যটকরাও উপকৃত হবেন। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে মানুষের বসার জায়গা, সড়ক সৌন্দর্যবর্ধন কাজ করতে পারে। রাঙ্গামাটিতে বেড়াতে আসা মানুষের ফ্রেশ হওয়া, শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। এসবদিকে সংশ্লিষ্টদের মনোনিবেশ করা উচিত। নয়তো দিন দিন আরো অনেক পর্যটন হারাবে রাঙ্গামাটি। বান্দরবান খাগড়াছড়ি রাঙ্গামাটি থেকে পর্যটনে অনেক এগিয়ে আছে।


বার্গী লেকভ্যালির পরিচালক সুমেত চাকমা বলেন, ইচ্ছেছিল অনেক বড় কিছু, পুঁজি সংকট অনেক কাজই করা যায় না। তবুও আমরা টাকা পয়সা সহযোগিতা চাই না। পর্যটনের উন্নয়ন করার জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে ব্যানার টানিয়ে বৈঠক করেছি। কিন্তু কিছুই হলো না। তারা তো পারে রাস্তার পাশে বসার জায়গা করে দিতে, যাত্রী ছাউনি বানিয়ে দিতে। এসবে তো পর্যটক ও সাধারণ মানুষ উপকারভোগী হবেন।

এদিকে, সম্প্রতি বাজেট বক্তৃতায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেছেন, রাঙ্গামাটির পর্যটন নিয়ে তারও মনঃক্ষুণ্ণ। কারণ, খাগড়াছড়ি-বান্দরবান রাঙ্গামাটি থেকে অনেক এগিয়ে গেছে। 

অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, রাঙ্গামাটির পর্যটনের উন্নয়ন আমরা ১২০০ কোটি টাকার একটা প্রকল্প মন্ত্রণালয়ের সাবমিট করেছি। এটি পাস হলে অনেক কিছুই করা যাবে। সাধারণত ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ চাইলেও ৪-৫ লাখ টাকার মধ্যে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব হয় না। মিনিমাম ২০-২৫ টাকা তো লাগেই।


এবারের কর্মসূচি

এবার ‘পর্যটনে পুনর্ভাবনা’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে যৌথ উদ্যোগে ২৭ সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক পর্যটন দিবস উদযাপন করবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ। এদিন সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি শহরের চম্পকনগর ওয়াপদা রেস্টহাউজের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি শুরু হবে। র‍্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হবে।

র‍্যালি শেষে জেলা পরিষদ মিলনায়তন অনুষ্ঠিতব্য আলোচনা সভায় রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এছাড়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা. আশরাফুল ইসলাম, পরিষদ সদস্য ও পর্যটন বিষয়ক আহবায়ক নিউচিং মারমা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //