যশোর-খুলনা মহাসড়কে ফের খানা-খন্দ

৩২১ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই ৮ কিলোমিটার অংশজুড়ে ফুঁলে ফেঁপে ওঠে। সেই থেকে সড়কের নির্মাণ কাজ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

নির্মাণ কাজের এ অনিয়ম নিয়ে তোলপাড় হয় সড়ক বিভাগে। ক্ষুব্ধ হন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তী সময় অনিয়ম ঢাকতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের ফুলেফেঁপে ওঠা ৮ কিলোমিটারজুড়ে শুরু করে জোড়াতালির কাজ। নতুন নির্মিত সড়কটিতে একের পর এক চলতে থাকে সংস্কার কাজ। কিন্তু বিভিন্নভাবে জোড়াতালি দিয়েও অনিয়ম ঢাকতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন।

গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সকল জোড়াতালি উঠে সড়কে বড় বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কটিতে চলাচল রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে দেখা দিয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরামর্শকের সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সওজ। 

জানা গেছে, ৮ কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছিল উঁচু নিচু অবস্থা। সেই জায়গাগুলো জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করলেও গত চার দিনের বর্ষায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে অভয়নগর ও যশোর সদরের সীমান্তবর্তী প্রেমবাগ স্কুল গেট থেকে শুরু করে বেঙ্গল রেলগেট পর্যন্ত খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। তবে আলীপুর মজুমদার মিলের সামনে, চেঙ্গুটিয়া বাজার, রাজটেক্সটাইল মিলের সামনে, ভাঙ্গাগেট রেল ক্রসিং, নওয়াপাড়া বেতারের সামনে ও প্রেমবাগ গেটের আগে গর্তগুলো বিপজ্জনক অবস্থা সৃষ্টি করেছে। একের পর এক ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের এ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোনো নিয়মনীতি মানেনি। তারা ইচ্ছেমতো কাজ করে। ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো নোনা ধরা ইট ও খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙে গর্তে ব্যবহার করেছেন। যা দরপত্রে বলা হয়নি। এছাড়া সড়কটি ৫ ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সেই নিয়মও মানেনি। সড়কে নতুন ইট বালি, খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে উঠানো মালামালই ফের ভরাট করা হয়েছে।

তাছাড়া ভৈরব নদ থেকে উত্তোলিত নিম্নমানের কাদাযুক্ত বালি সড়কে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ফলে সড়কের নির্মাণ কাজ চলমান থাকা অবস্থায় ৮ কিলোমিটার সড়ক ফুলেফেঁপে ওঠে। ওই সময় সরকার বুয়েটের একজন শিক্ষককে পরামর্শক নিয়োগ করেন। তিনি সরেজমিন ঘুরে সড়কের দুই পাশে ওয়্যারিং করার সুপারিশ করেন। সেই সুপারিশের আলোকে সরকার পুনরায় সড়কটি নির্মাণে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করে আরও ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করেছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের যশোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফ মাহমুদ জানান, পরামর্শকের সুপারিশ অনুযায়ী সড়কের দুই পাশে হার্ডশোল্ডার ওয়্যারিং করা হবে। কেননা রাস্তার পাশে দেড় মিটার নিচু থাকার কারণে গাড়ির চাপ পড়ছিল রাস্তার মাঝখানে। যে কারণে সড়কের নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গত মাসের একনেক সভায় সরকার এই টাকা বরাদ্দ করেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //