নৌকা ও জাল মেরামতে ব্যস্ত ভোলার জেলেরা

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারো ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের জন্য ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, মজুদ এবং ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় করনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। 

তাই ইলিশের প্রধান এই প্রজনন মৌসুমে ভোলার জেলেরা অবসর সময়ে নৌকা মেরামত, নতুন জাল তৈরি ও ছেঁড়া জাল মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ভোলার তুলাতুলি, ভোলাখাল, ইলিশা, শিবপুর, রাজাপুর, ও নাছির মাঝি ঘাটসহ মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ বিভিন্ন জেলেপল্লিতে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা তাদের মাছ ধরার নৌকা নোঙ্গর করে নতুন জল তৈরি, পুরাতন জাল মেরামত ও নৌকা সংস্কারসহ যাবতীয় কাজগুলো করছেন।

ভোলার তুলাতুলি এলাকার মেঘনা নদীর তীরবর্তী পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, ভোলার শহর রক্ষা বাঁধের ব্লকের ওপর কয়েক লাখ মিটার জাল ও মাছ ধরার নৌকা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। 

এসময় জেলে আলী হোসেন বলেন, আমরা সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা মেনে চলি। আমরা আমাদের নৌকা নদী থেকে উপরে উঠিয়ে মেরামত ও জাল তৈরির কাজ করছি। নিষেধাজ্ঞার এসময় আমরা কেউই নদীতে মাছ শিকার করি না। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতের জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। আর আমরা মাছ না ধরে সরকারের আইন মেনে কষ্টে জীবন যাপন করি।

জেলে ফারুক মাঝি বলেন, সরকারের দেওয়া সব নিষেধাজ্ঞাই আমরা ঠিক মতো পালন করি। নিষেধাজ্ঞার সময় আমরা মাছ ধরি না। এজন্য সরকারের দেয়া প্রণোদনা যাতে আমরা সময় মতো পাই এটাই দাবি।

ভোলার ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির নেতা মো. এরশাদ জানান, প্রত্যেক বছরই ভোলার জেলেরা সরকারের দেওয়া অভিযান মেনে মাছ শিকার থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু জেলেরা তাদের সঠিক প্রণোদনা পায় না। তাই নিষেধাজ্ঞা সফল করতে হলে জেলেদেরকে সঠিক সময়ে প্রণোদনা দেওয়ার দাবিও করেন।

ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ জানান, ইলিশের এই প্রধান প্রজনন মৌসুমের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করা গেলে এবছর ভোলায় ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তাই জেলেদেরকে নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ শিকার থেকে বিরত রাখতে ভোলার ১ লাখ ৩২ হাজার জেলেকে প্রণোদনা হিসাবে জনপ্রতি ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হবে। এরপরও যে সমস্ত জেলে আইন অমান্য করে মাছ শিকার করবে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মৎস্য আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে ৮ জেলেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জব্দ করা হয়েছে দুটি মাছ ধরার ট্রলার ও বিভিন্ন ধরনের জাল।

সরকারের দেওয়া প্রণোদনার চাল খুব দ্রুতই পাবেন ভোলার জেলেরা- এরকমটাই এখন প্রত্যাশা জেলে ও মৎস সমিতির নেতাদের।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //