পাবনা সদর হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগ

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক উমা রায়ের বিরুদ্ধে তার অধীন নার্সিং কর্মকর্তা- কর্মচারীদের নানা হুমকি দিয়ে অনৈতিক সুবিধা, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের টিফিনের টাকা আত্মসাৎসহ নানান অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

হাসপাতালের ভুক্তভোগী নার্সিং কর্মকর্তা- কর্মচারীদের স্বাক্ষরিত একাধিক লিখিত অভিযোগে এ তথ্য জানা গেছে। হাসপাতালের নার্সিং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেওয়া অভিযোগটি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে প্রদান করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পক্ষে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের প্রশাসন ও মিডওয়াইফারি বিভাগের সহকারী পরিচালক মীরা রানী দাসের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গত মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সরেজমিন তদন্ত করেছে। তারা অভিযুক্ত সেবা তত্ত্বাবধায়ক উমা রায়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছ থেকে তথ্য- উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। তবে তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলতে চাননি। ভুক্তভোগীদের দেয়া অভিযোগে জানা গেছে, সেবা তত্ত্বাবধায়ক উমা রায় দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে বিভিন্ন প্রকার দুর্নীতি- অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারী কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন।

কোভিড- ১৯ ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের টিফিনের জন্য দেওয়া টাকা আত্মসাৎ, অতিরিক্ত ও অসময়ে ডিউটি দেয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায়, এসিআর- ডিজিএনএম-এ টাকা জমা দেয়ার নাম করে অর্থ আদায়, নার্সিং বিষয়ে ট্রেনিং করার নামে অর্থ আদায়, চেয়ার ও অরগানোগ্রাম কেনার নামে চাঁদা আদায় এবং বেসরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে ইন্টার্নি করতে আসা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়সহ ২৩টির বেশি অভিযোগ উল্লেখ্য করা হয়েছে এসব অভিযোগপত্রে। 

অভিযোগকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। আমরা বিভিন্ন সময় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও সিভিল সার্জনের কাছে একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয় না। এজন্য তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন। তার দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা অনেকটাই নাজুক হয়ে পড়েছে। তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ্য করে ডক্টর ডিগ্রি ব্যবহার করেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব নেই।  

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেবা তত্ত্বাবধায়ক উমা রায় বলেন, তদন্ত কমিটির কাছে আমি আমার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগের জবাব দিয়েছি। আমার চাকরির আর মাত্র কয়েক মাস বাকি আছে। এই মুহূর্তে আমি এসব বিষয় নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, অভিযোগুলো আমার আগের সহকারী পরিচালকের সময়ে করা হয়েছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলছে, তাই তদন্তাধীন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। 

পাবনা সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, অভিযোগের বিষয়ে নার্সিং অধিদপ্তরের ডিজি পর্যায়ে থেকে তদন্ত হচ্ছে। ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত করে গেছে। তবে এই প্রতিবেদন পাবনাতে নয় তারা নার্সিং অধিদপ্তরে জমা দেবেন। এর বাইরে এই বিষয়ে আর কিছু বলতে পারছি না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //