৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

বগুড়ায় শিশু মাহি উম্মে তাবাসসুমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে চার জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনাল-২ এর বিচারক নুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর এই রায় ঘোষণা করেন।

এসময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্র্যাইব্যুনাল-২ এর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আশিকুর রহমান সুজন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বগুড়ার ধুনট উপজেলার নশরতপুর গ্রামের মোজাম্মেলের ছেলে বাপ্পি আহম্মেদ (২৪), একই এলাকার দলিল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে কামাল পাশা (৩৭), ছানোয়ার হোসেনের ছেলে শামিম রেজা (২৪) ও মৃত সাহেব আলীর ছেলে লাভলু শেখ (২৩)। তারা একে অপরের বন্ধু। বাপ্পি স্থানীয় জিএমসি ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। কামাল পাশা মুদি দোকানদার, শামীম রেজা রাজমিস্ত্রি ও লাবলু রংমিস্ত্রি।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার ধুনট থানার নশরতপুর গ্রামের ৭ বছরের শিশু কন্যা মাহি উম্মে তাবাসসুমের বাবা-মা গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। তাবাসসুম তার দাদা আবদুস সবুরের বাড়িতে থেকে পাঁচথুপি-নশরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো।

২০২০ সালে ১৪ ডিসেম্বর রাতে তাবাসসুম তার দাদা ও ফুফুর সঙ্গে নশরতপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে ওয়াজ মাহফিলে শুনতে যায়। রাত ১০টার দিকে তাবাসসুম ঐ স্থানে বসা ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে মিষ্টি কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে রাত দেড়টায় ঐ গ্রামের একটি বাঁশ ঝাড়ে তাবাসসুমের লাশ পাওয়া যায়। পরদিন তাবাসসুমের বাবা বেলাল হোসেন বাদী হয়ে ধুনট থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেন। 

মামলাটি তদন্তকালে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিতে শিশু তাবাসসুমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করেন। ধুনট থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদুল হক মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালে ২৫ নভেম্বর আদালতে ৪ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল -২ এর স্পেশাল পিপি আশেকুর রহমান বলেন, বিচারক রায়-এ আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু কার্যকরের আদেশ ছাড়াও প্রত্যেকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন। 

তিনি আরো বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করায় বাদীপক্ষ খুশি। তবে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে আসামিপক্ষের আইনজীবী।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //