নওগাঁয় পানিবন্দি ৩০ পরিবার

নওগাঁ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের চকরামপুর গ্রামের মোল্লাপাড়ায় পাকা ড্রেন ও দুটি সরকারি কালভার্ট- ব্রিজ দিয়ে তুলশীগঙ্গা নদীতে পানি প্রবাহিত হতো; কিন্তু গত দুই বছর যাবৎ এলাকার প্রভাবশালী সুরমা মাল্টিপারপাসের চেয়ারম্যান সবেদুল ইসলাম রনি তুলশীগঙ্গা নদীর তীরবর্তী পূর্ব পাশ্বের নদীর নিচু জমি দখল করে মাটি ভরাট করায় ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে যায়।

যার কারণে জলাবদ্ধতায় হুমকির মুখে প্রায় ৩০টি বাড়ি। সামান্য বৃষ্টিতেই জমে হাঁটু পানি। রান্না করাসহ সন্তান ও গবাদিপশু নিয়ে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। এর মধ্যেই গ্রামের ২০টি আধাপাকা বাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ফসলের মাঠে প্রায় ১০ থেকে ১৫ বিঘা আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। যার কারণে জমিতে ফসলের জায়গায় কচুরিপানায় পরিপূর্ণ।

গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হক শুভ জানান, ড্রেনের পানি চলাচল বন্ধ হওয়ার জন্য বাচ্চাদের নিয়ে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। তারা পানির কারণে ঠিক মতো স্কুল, কলেজে যেতে পারছে না। খেলাধুলা করতে পারছে না। সব সময় পানিবন্দি অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। এতে বাচ্চাদের মেধা বিকাশে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়াও পানি জমে থাকার কারণে বড় ও ছোট বাচ্চারা পায়ে ঘাসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। 

গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ রানা বলেন, আমাদের গ্রামের পানি চলাচলের ড্রেনের পাশে যারা বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন, তারা সকলেই গ্রামবাসীর সুবিধার্থে পাকা ড্রেন নির্মাণ করে দিয়েছেন। সবেদুল ইসলাম রনি প্রভাবশালী হওয়ার কারণে ড্রেনের মুখ বন্ধ করে মার্কেট নির্মাণ করে ড্রেনের পানি নদীতে নিষ্কাশন ব্যাহত করছেন। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই- অতি দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। তা না হলে গ্রামবাসী বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

একসময় বড় ধরনের পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা দেখা দেবে। প্রতিকার চেয়ে গ্রামবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ভূমি অফিস, পৌরসভা, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে; কিন্তু সবেদুল ইসলাম রনি প্রভাবশালী হওয়ার কারণে কোনো সুরাহা পাচ্ছে না ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুরমা মাল্টিপারপাসের চেয়ারম্যান সবেদুল ইসলাম রনির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কারও জায়গা দখল করে জমি ভরাট করিনি। আমি আমার নিজ জমি ভরাট করেছি। এখানে কোনো ড্রেন বন্ধ করিনি। আমিতো আমার জায়গার ওপর দিয়ে কোনো ড্রেন নিতে দেব না। যদি ড্রেনের প্রয়োজন পড়ে গ্রামবাসীকে বলুন জমির সাইট দিয়ে ড্রেন করে নিতে। কোন সাহায্য-সহযোগিতা করার প্রয়োজন পড়েলে আমি করব। নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //