ধানে পোকার আক্রমণে ক্ষতির শঙ্কায় কৃষক

নীলফামারীর ডোমারে আমন ধানে পোকার আক্রমণ হওয়ায় ক্ষতির শঙ্কায় পড়েছে কৃষকরা। আর কয়েক দিন পরেই ধান কাটার ধুম পড়বে। ঘরের লক্ষি হয়ে কৃষকের গলায় উঠবে নতুন আমন ধান। মৌসুমের শেষ সময়ে এসে কৃষকদের দিশেহারা করে দিয়েছে পোকার আক্রমণ।

কারেন্ট ও মাঝড়া পোকার আক্রমণে চিন্তার ভাজ পড়েছে কৃষকের কপালে। খেতে ওষুধ স্প্রে করেও মিলছে না সুফল। উপজেলায় শুধু যে এক দুই ইউনিয়নে ধানে রোগ হয়েছে তা কিন্তু নয়। এক পৌরসভাসহ দশটি ইউনিয়নের ধান খেতে ছড়িয়ে গেছে এই রোগ। 

এমন ঘটনায় ডোমার হরিনচড়া ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের কৃষক অনিল চন্দ্র রায় বলেন, আমি দুই একর ৩৩ শতাংশ খেতে আমন ধানের চাষ করেছি। আমার খেতের মাঝে মাঝে ধানগাছ মরে শুকিয়ে গেছে। অনেক ওষুধ স্প্রে করেছি, কোনো কাজ হয় নাই। খরচ উঠবে কিনা সন্দেহ। এতে আমার ধানের ফলন বিঘায় নিম্নে দুই থেকে তিন মন ধান কম হবে। 

পৌরসভা চিকনমাটি এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডের কৃষক আশিকুর রহমান বলেন, মোট এক একর ৬৬ শতাংশ আবাদের মধ্যে আমার ১৬ শতাংশ খেতে বি এস এর পরামর্শে ওষুধ দিলেও কোনো কাজ হয় নাই। এ রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে ধান খেতে। 

সোনারায় ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেনের একই অবস্থা। তার ৩৩ শতাংশ ধান নষ্ট। মটুকপুর ইউনিয়নের মশিয়ার রহমানের ৩৩ শতাংশ নষ্ট। ধানের এমন অবস্থায় কৃষক পড়েছে মহাচিন্তায়। 

তারা বলেন, গত বছর আনুমানিক ৩৩ শতাংশ জমিনে ফলন আসছিল নিম্নে ১২ থেকে ১৩ মন ধান। সেখানে এবার প্রতিবিঘায় কম হলেও ২ থেকে ৩ মন ধান কম আসবে। এতে করে আমরা যেমন কাঙ্ক্ষিত ফসল থেকে বঞ্চিত হব, তেমনি ভাবে আমন ধান মজুদের লক্ষ্যমাত্রায় দেখা দিতে পারে ঘাটতি। 

এ বিষয় কথা হলে ডোমার উপজেলা কৃষি অফিসার (কৃষিবিদ) আনিছুজ্জামান বলেন, কৃষককে খেতের ধান গাছ আরাই হাত দূরত্বে ফাঁকা ফাঁকা করে দিতে বলেছি, ধানের গোড়ায় ওষুধ স্প্রে করতে পরামর্শ দিয়েছি। এমন রোগ আক্রমণের আগেই জমিতে ওষুধ স্পে করলে ধান রক্ষার কার্যকারিতা বেশি। তাছাড়া  জমিনের ৭৪% ধান পাকলে কৃষককে কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া আমরা যে নিয়মে জমিতে ধানগাছ লাগাতে বলি সে নিয়ম ধানগাছ লাগায় না কৃষক। আমাদের উপজেলা উপসহকারী কৃষি অফিসাররা কৃষকদের পাশে থেকে ফসল রক্ষায় সবসময় নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, একই জমিতে বার বার একই আবাদ করলে খেতে রোগ বালাইয়ের প্রাদুর্ভাব বেশি ঘটে। এছাড়াও কৃষকদের অধিক ফলন পেতে নতুন জাতের আগাম বিনা ধান-১৭ ও বিনা-২২ জাতের ধান চাষ করার পরামর্শ দিয়ে আসছি অবিরত। এবারে উপজেলায় ১৮ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ করা হয়েছে। তার মধ্যে উপশী জাত ১৬ হাজার ১৯০ হেক্টর, হাইব্রীড ২ হাজার ২০০ হেক্টর,  স্থানীয় দেশীয় জাত ৪৫ হেক্টর।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //