আশুগঞ্জ নৌবন্দর হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে খুব শিগগিরই ১ হাজার ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের নৌবন্দরের নির্মাণকাজ। ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্রের প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুত শুরু হবে বন্দরের দৃশ্যমান উন্নয়নকাজ। 

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম নৌবন্দর হচ্ছে আশুগঞ্জ নৌবন্দর। কিন্তু দীর্ঘ এক যুগেও বন্দরে লাগেনি কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া। বন্দরে থাকা দুটি জেটি দিয়েই চলছে অভ্যন্তরীণ পণ্য লোড-আনলোডের কার্যক্রম। এতে প্রায়ই নৌবন্দরে কার্গোজটের সৃষ্টি হয়। পণ্য খালাস নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অবস্থিত নৌবন্দরটিকে অভ্যন্তরীণ নৌবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেয় সরকার।

আশুগঞ্জ নৌবন্দর ব্যবহার করেই (আশুগঞ্জ নৌবন্দর হয়ে আখাউড়ার স্থলবন্দর দিয়ে) ভারত গত ২০১১ সালে তাদের ত্রিপুরা রাজ্যের পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভারী মালামাল পরিবহন করে। পরে কয়েক দফায় ভারত এই আশুগঞ্জ নৌবন্দর ব্যবহার করে খাদ্যশস্যসহ স্টিলজাতীয় পণ্য পরিবহন করে। গত ১২ বছরে অভ্যন্তরীণ নৌবন্দরের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও আশুগঞ্জ নৌবন্দরের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু বন্দরে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় বন্দর ব্যবহারকারীরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্দরটিতে আন্তর্জাতিক মানের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি জানান। 

আশুগঞ্জ নৌবন্দরের সার ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম বলেন, বিআইডব্লিউটিএ যে ইজারা দিয়েছে, তাতে কোনো ঘাট নেই। বন্দরে দুটি জেটি আছে, এর মধ্যে একটি জেটি ভারতের মালামাল নেওয়ার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, আমাদের কার্গো জাহাজ বন্দরে থাকার সময় ভারতের কোনো কার্গো জাহাজ বন্দরে এলে আমাদের দ্রুত ঘাট ছেড়ে দিতে হয়। সিমেন্টের জন্য একটি নির্ধারিত ঘাট আছে; কিন্তু সারের জন্য কোনো ঘাট নেই। তিনি বলেন, ‘বন্দরে আন্তর্জাতিক মানের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হলে আমরা আমাদের চাহিদা অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা পাব। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।’

নৌবন্দরের ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া বলেন, এই বন্দরে আন্তর্জাতিক মানের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করলে পণ্য লোড-আনলোডের জটিলতা অনেকটাই কমে যাবে। তিনি আরো বলেন, ‘আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত রাস্তার ফোর লেনের কাজ শেষ হলেই আমরা সহজে ভারতে মালামাল পাঠাতে পারব। এতে দুই দেশের ব্যাবসায়িক সম্পর্ক আরো বাড়বে।’ 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ভৈরব-আশুগঞ্জ নৌবন্দরের উপপরিচালক রেজাউল করিম বলেন, আশুগঞ্জ নদীবন্দরের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্রের প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুত শুরু হবে বন্দরের দৃশ্যমান উন্নয়নকাজ। আশুগঞ্জ নৌবন্দরটির অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ শেষ হলে মোংলা-পায়রা এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আসা কনটেইনার বন্দরটি দিয়ে ওঠা-নামা করবে। এই বন্দর আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক নৌযোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, প্রায় ৩১ দশমিক ৫ একর জমির ওপর প্রস্তাবিত আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ নৌবন্দরটির নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //