আয়াত খুনের মামলায় গ্রেপ্তার হলেন আবিরের মা-বাবা

চট্টগ্রামের ইপিজেডে পাঁচ বছর বয়সী শিশুকন্যা আয়াতকে অপহরণের পর খুন করে লাশ ছয় টুকরো করে খালে-সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার রহস্য উদঘাটনে এবার অভিযুক্ত আবির আলীর বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। 

মূলত অপহরণ ও খুনের পর লাশ ছয় টুকরো করার কারণ বের করতেই বাবা-মাকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পিবিআই। 

আজ মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহর আদালত পিবিআইয়ের সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আবিরের বাবা-মাকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠায়। 

এরআগে সোমবার (২৮ নভেম্বর) রাতে বন্দরটিলার বাসা থেকে আবির আলীর পিতা ভ্যানচালক আজহারুল ইসলাম ও মা আলেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আয়াত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মনোজ দে। 

গত ২৪ নভেম্বর রাতে সিপিজেডের আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার বাসা থেকে আয়াতদের ভাড়াটিয়া আবির আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন থেকে চলা অভিযানে আয়াতের রক্তামাখা কাপড় ও সেন্ডেল উদ্ধার করলেও এখনো উদ্ধার হয়নি মাংসপিণ্ড। আসামি আবির আলীকে নিয়ে পিবিআই সাগরপাড়ে টানা তিন দিন অভিযান চালালেও কোন কিছুর হদিস পায়নি। 

গত ২৫ নভেম্বর নিখোঁজের ১০ দিনের মাথায় আবির আলী নামের এক যুবককে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সেই নিখোঁজ রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই। একইসাথে গ্রেপ্তার আবির আলী স্বীকারও করেন- মুক্তিপণ দাবির জন্যই আবির আলী তার বাড়িওয়ালার নাতনিকে অপহরণ করে। মেয়েটি চিৎকার করায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরে লাশ গুম করতে আয়াতকে করা হয় ছয় টুকরো। আয়াতের খণ্ডিত মাংসপিণ্ডগুলোও ভাসিয়ে দেওয়া হয় সাগরে। তবে আসামি গ্রেপ্তারের পর খুনের ঘটনায় জড়িত এবং সব দায় স্বীকার করে। নিখোঁজের পর দিন ইপিজেড থানায় দায়ের হওয়া জিডি এখন মামলা হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। 

গত ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার বন্দরটিলার এলাকার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত। এর পরদিন শিশুর বাবা সোহেল রানা এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করলেও কোন হদিস মিলেনি। নিখোঁজের দশ দিনের মাথায় শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) আবির আলী নামের এক যুবককে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এ নিখোঁজ রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, আবির আলী মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে ঘটনার দিন বিকেলে আয়াতকে অপহরণ করে। পরে আয়াত চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে বাজারের ব্যাগে ভরে আকমল আলী সড়কের বাসায় নিয়ে ছয় টুকরো করে। তারপর কাট্টলীর সাগর পাড়ে ফেলে দেয়। গ্রেপ্তারের পর আবির আলী সব কিছু স্বীকার করে নেয়। মরদেহ টুকরো করার কাজে ব্যবহার করা বটি ও অ্যান্টি কাটার উদ্ধার করা হয়েছে আবির আলীর বাসা থেকে। 

ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা ও সাহিদা আক্তার তামান্না দম্পতির মেয়ে আয়াত। তিনতলা ভবনের মালিক সোহেলের ওই এলাকায় একটি মুদির দোকান আছে। আয়াত স্থানীয় তালীমূল কোরআন নূরানী মাদ্রাসার হেফজখানার ছাত্রী ছিল।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //