দুর্নীতির অভিযোগে বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের বদলির পর এবার ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। 

সাময়িক বরখাস্তরা হলেন প্রিন্সিপাল অফিসার মহিদুল ইসলাম, সাদেক আলী এবং অফিসার ক্যাশ দবির হোসেন।

এর আগে গত সপ্তাহে যশোরের প্রধান শাখায় বদলি করা হয়েছে বেনাপোল শাখা ব্যবস্থাপক প্রিন্সিপাল অফিসার আক্তার ফারুককে। 

আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মহসিন আলী। 

তিনি বলেন, এ শাখার তিন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে বুধবার সকালে জেনেছি। কিন্তু বেনাপোল শাখায় এখনো কোনো চিঠি এসে পৌঁছায়নি। বিভিন্ন সময়ে তাদের অনিয়ম এবং দুর্নীতি তদন্তে ধরা পড়লে কর্তৃপক্ষ এ তিন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। বিষয়টি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে অধিকতর তদন্ত করতে সোনালী ব্যাংকের একটি টিম কাজ করছে। 

সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, কয়েক কোটি টাকা শুল্ক পরিশোধ না করে সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখা থেকে আমদানিকারকের অনুকূলে ছাড়পত্র প্রদানের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খালিদ এন্টারপ্রাইজ সম্প্রতি একাধিক এলসি’র মাধ্যমে ভারত থেকে কয়েক কোটি টাকার ফল আমদানি করে। এসব পণ্যের চালানের খালাস নিতে আমদানিকারকের পক্ষে কাস্টম হাউজে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করেন বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট আলেয়া এন্টারপ্রাইজের পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. শান্ত। কিন্তু তারা আমদানি পণ্যের বিপরীতে আসা এক কোটি ৬০ লাখ টাকা শুল্ক পরিশোধ না করেই সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ছাড়পত্র (রিলিজ অর্ডার) নিয়ে আমদানি করা মালামাল খালাস করে নিয়ে যায়। 

বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসলে তাদের একটি টিম গত সপ্তাহে বেনাপোল সোনালী ব্যাংকে আকস্মিক অভিযান চালায়। এ সময় শুল্ক পরিশোধ না করে ছাড়পত্র প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত হলে আমদানিকারকের পরবর্তী পণ্য চালানের বিপরীতে জমা দেওয়া শুল্কের টাকা বকেয়ার সাথে সমন্বয় করেন। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিষয়টি সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়।

কয়েকজন সিএন্ডএফ এজেন্ট সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোলের কয়েকজন শুল্ক ফাঁকির হোতা সিন্ডিকেট করে আমদানি করা প্রতিটি ফলের শুল্কের চালানের বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের বেনাপোল শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের এ সুযোগ দিয়ে আসছিল। এ ঘটনায় প্রায় ২০ কোটি টাকা শুল্ক পরিশোধ না করে শুল্ক পরিশোধের চালান নিয়ে মাল খালাস করে নিয়ে যায়।

সোনালী ব্যাংক যশোর অঞ্চলের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমদানি পণ্যের শুল্ক পরিশোধ না করে চালানের কাগজপত্র নিয়ে যাবার চেষ্টা করে একটি প্রতিষ্ঠান। পরে আমরা শুল্ক আদায় করেই ছাড়পত্র দিয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে শাখা ব্যবস্থাপক আক্তার ফারুককে গত সপ্তাহে যশোরে বদলি করা হয়েছে। আজ আরো তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে যারা দোষী হবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //