আমন ধানে নতুন স্বপ্ন সুনামগঞ্জের কৃষকদের

বন্যার ক্ষত কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সোনালি আমনে স্বপ্ন বুনছে সুনামগঞ্জের কৃষকরা। ফিকে হয়ে যাওয়া প্রান্তিক কৃষকদের স্বপ্নগুলো সোনালি ধানে ধানে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। বাতাসে ভাসছে পাকা ধানের ম-ম গন্ধ।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার ফলে স্বস্তিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। তবে ধানের মূল্য নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। ধানের ন্যায্যমূল্য না পেলে উৎপাদন খরচ উঠবে না। কৃষকরা যাতে প্রকৃত মূল্য পায় সেজন্য সরকারিভাবে সরাসরি কৃষকদের থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কেনার পাশাপাশি বাজার তদারকির দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায় ফসলের মাঠে এখন সোনালি স্বপ্নের ছড়াছড়ি। পাকা ধানের উপস্থিতিতে কৃষকের মনে লেগেছে আনন্দের ঢেউ। কৃষকরা তাদের কষ্টে ফলানো সোনালি আমন ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে। মাঠে কৃষক শ্রমিকদের নিয়ে কোথাও কোথাও কৃষক ও তাদের সন্তানরা নিজেরাই কাটছে। সেই ধান বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে।

আর বাড়িতে সেই ধান মাড়াই আর শুকানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষাণীরা। এ বছর সুনামগঞ্জ জেলায় আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮১ হাজার ১০০ হেক্টর। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় ৮২ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়। ১ অগ্রহায়ণ থেকে শুরু হয়েছে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে আমন ধান কাটা উৎসব।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার সুনামগঞ্জ সদরে ১১ হাজার ৬১০ হেক্টর, তাহিরপুরে ৬ হাজার ৩৩৫ হেক্টর, ধর্মপাশায় চার হাজার ৫৭০ হেক্টর, জামালগঞ্জে চার হাজার ৫৪৫ হেক্টর, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ১৪ হাজার ৬২৫ হেক্টর, ছাতকে ১২ হাজার ৯৫৫ হেক্টর, জগন্নাথপুরে ৯ হাজার ৫৫৫ হেক্টর, বিশ্বম্ভরপুরে ৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টর, শান্তিগঞ্জে চার হাজার ২১০হেক্টর, দিরাইয়ে দুই হাজার ২২৫ হেক্টর, শাল্লায় দুই হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। জেলায় এবার সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়েছে ব্রি-৪৯ ও বিআর ২২ জাতের ধান।

কৃষক রহিম মিয়া বলেন, গত দুই বছরের তুলনায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সে ধান কেটে ঘরে তুলছি, এবার কষ্ট ঘুচবে। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ঋণ করে আমনের চাষ করেছি। আমনের ভালো ফলন হয়েছে এবার। ঋণগ্রস্ত অনেক কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে। 

জেলার তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. হাসান উদদৌলা জানান, বিগত বছরের চেয়ে এ বছর আমন আবাদে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষাবাদও হয়েছে বেশি। ফাঁকে ফাঁকে হালকা বৃষ্টিপাত হওয়ায় ক্ষতিকর পোকা-মাকড়ের উপদ্রব ছিল না। এতে ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

কৃষকরা ধান কাটছে, অনেকেই সরকারি ভর্তুকিতে নেওয়া মেশিনে ধান কাটছে। কৃষকদের জন্য সরকারও ন্যায্য দামে আমন সংগ্রহ করবে। এবার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //