ছাত্রলীগের কমিটির নামে বাণিজ্যের অভিযোগ, উত্তপ্ত ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহে তিনদিনে তাড়াহুড়া করে সম্মেলন ছাড়াই ছাত্রলীগের ৯ কমিটি ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। কমিটি ঘোষণার পর জেলা জুড়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। কমিটি দেয়ার নামে বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন পদবঞ্চিত নেতারা। ঘটছে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনা।

গত ৩ ডিসেম্বর শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি সাক্ষরিত সদর, ফুলবাড়িয়া, গৌরীপুর, ত্রিশাল, ত্রিশাল পৌর, ভালুকা, ঈশ্বরগঞ্জ, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর, মুক্তাগাছাসহ ৯ কমিটি ঘোষণা করে। এর পর থেকেই জেলা জুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাসে দুই পক্ষ একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে। দুই পক্ষই পরস্পর বিরোধী স্লোগানের এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। ঘটানো হয় ককটেল বিস্ফোরণ। এতে কমপক্ষে তিন ছাত্রলীগ নেতা আহত হয়। তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

এদিকে, কমিটি ঘোষণা করার পর থেকে জেলার মুক্তাগাছা ও গৌরীপুর উপজেলায় পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছেন নেতাকর্মীরা। 

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন গ্রুপের নেতা ও আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের আহবায়ক শেখ সজল বলেন, দীর্ঘ দুই বছর আমাদের কমিটি দিয়েছে। তাই, আমরা নেতাকর্মীরা এক সাথে স্লোগান দিচ্ছি। তবে, কেউ যদি হামলা করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তাহলে সাধারণ ছাত্রদের রক্ষায় আমরা প্রস্তুত আছে। তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। 

এদিকে, জেলা ছাত্রলীগের হুমায়ুন কবির গ্রুপের ছাত্রনেতা ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজুল আলম ফাহাদ বলেন, আমরা মুখোমুখি অবস্থানে নেই। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি অর্থের বিনিময়ে কমিটি দেয়ায় তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটি হুমায়ুন কবিরের প্রত্যাহার আদেশ বাতিল করে আবারও সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্বহাল করেছে। আমরা তাকে আবারো সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দেখতে চাই।

এ বিষয়ে মুক্তাগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুভ দে বলেন, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কোন কমিটি দিতে পারে না। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন কমিটি নিয়ে বাণিজ্য করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে, গৌরীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, আমি পদে বহাল হওয়ার পরেও তাড়াহুড়া করে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন অলি ও সভাপতি আলামিন মিলে ৯টি কমিটি দিয়েছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও নিয়ম বহির্ভূত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের পদ ফিরে পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে নিশ্চিত হলে তার পদ ফিরে পাবে।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন বলেন, আমরা অবৈধ কোন কমিটি দেইনি। কারণ, হুমায়ুন কবির ৬ তারিখে পদবি ফিরে পেয়েছে। আমরা ২ তারিখ থেকে পাঁচ তারিখ রাত ১২ টার আগেই কমিটি ঘোষণা করেছি। অর্থের বিনিময়ে কোনো কমিটি দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, টাউন হল এলাকায় দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় একজন আহত হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //