সেই বুশরার মুক্তি চেয়ে পরিবারের আকুতি

বুয়েটের ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যু নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ প্রায় শেষ। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দাবি করছেন, এই বুয়েট ছাত্রকে হত্যা স্বীকার হননি বরং আত্মহত্যা করেছেন। অথচ, তাকে হত্যায় দায়ের করা মামলায় এখনো কারাগারে রয়েছেন তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরা। বুশরার মুক্তি চেয়ে সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছে তার পরিবার। 

গতকাল সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ শহরের বয়লা এলাকায় নিজ বাড়িতে বুশরার মুক্তির আকুতি জানান তার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম।

জানা গেছে, বুশরার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে সবুজ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট। ২০১৭ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। মা ইয়াসমিন গৃহিণী। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বুশরা সবার বড়। তারা কিশোরগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা।

মঞ্জুরুল বলেন, আমার মেয়ে সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমার নির্দোষ মেয়েটাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ইতোমধ‌্যে র‌্যাব, ডিবি পুলিশ তদন্তে আমার মেয়ের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি। সরকারের কাছে হাত জোড় করে আবেদন করছি আমার মেয়েটাকে আপনারা মুক্তি দিন। কোট বন্ধ থাকায় আমরা জামিনের আবেদন করতে পারছি না। আমরা বিশেষ আদালতে জামিনের আবেদন করার চেষ্টা করছি। 

তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ের সাথে সম্প্রতি তার মা দেখা করেছে। বুশরা জানিয়েছে, আমিতো মা কোনো দোষ করিনি আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

মঞ্জুরুল জানান, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে ফারদিনের সাথে বুশরার পরিচয়। এর বাইরে তাদের মধ্যে অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল না। বুশরার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তায় আছি। ফারদিনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে দেশবাসীর সাথে আমরাও মর্মাহত। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি আমার মেয়েটার মুক্তি দিন। নির্দোষ মেয়েটাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সাহায্য করুন। পড়াশোনা চালাতে পারছে না, ক্লাসগুলো মিস হচ্ছে। দয়া করে মুক্তি দিন।

গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হন ফারদিন। এর তিন দিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। তিনি রাজধানীর ডেমরা এলাকায় থাকতেন, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বুশরা এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের নামে গত ৯ নভেম্বর রাতে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা। 

পরদিন সকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমাতুল্লাহ বুশরা পড়েন ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে রামপুরার বনশ্রী এলাকায় মেসে থাকতেন। 

তদন্তকারী পুলিশ ১০ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন‌্য মেয়েটির রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ১৬ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়-বুয়েট ছাত্র ফারদিন মৃত্যু সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং অগ্রগতি পেয়েছে র‍্যাব। এরপরেই ডিবির পক্ষ থেকে আত্মহত্যার খবর জানানো হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //