‘পদত্যাগ বিতর্কিত করতে সাত্তারকে নির্বাচনে এনেছে সরকার’

সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকারের একটি চাপ আছে তার উপর। সরকার যেকোনো ভাবে আমাদের পদত্যাগকে বিতর্কিত করতে চায়। সরকার সেটা সফলভাবে করেছে। তাকে চাপ দিয়ে এই নির্বাচনে আনা হয়েছে।

আজ শনিবার (৭ জানুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুনিয়াউটে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলের বাস ভবনে আয়োজিত এক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা তার বক্তব্যে বলেন, ক্ষমতায় গেলে জুডিসিয়াল কমিশন গঠন করবো। আপনারা জানেন কিছুদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে যে ঘটনাটি হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। আওয়ামী লীগের উপজেলার সাধারণ সম্পাদক, তিনি বারের সভাপতি। তিনি গিয়ে অকথ্য ভাষায় একজন বিচারককে গালাগাল করেছেন, তা কোন অবস্থাতেই চলতে পারে না। একই সাথে এই কথা বলবো, আদালত আপনারা কি করেছেন! নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত যখনই দেখেছেন বিএনপির নেতাকর্মী, তাদেরকে জেলে ভরেছেন। যখনই দেখেছেন বিএনপি নেতাকর্মী তাদেরকে জামিন দেন নাই। সরকারের ইশারায় আপনারা চলেছেন, এখন সরকারের লোকরাই মনে করে আপনারা তাদের.....আর বলতে চাই না।

তিনি বলেন, বিএনপি আগামীতে কি ধরনের রাষ্ট্র দেখতে চায় তা ২৭ দফার মধ্যে দেওয়া হয়েছে। এর আগে আমরা ১০ দফা দিয়েছি, সেই ১০ দফায় আমাদের সম্প্রতি যে কর্মসূচি তা বলেছি। আর ২৭ দফার শুরুতেই বলেছি সংবিধান সংস্কার কমিশন করবো। কারণ আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসে সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে তাদের দলীয় বইয়ে পরিণত করেছে। সংবিধানের কিছু ধারা তারা এমনভাবে তৈরি করেছে, বলা হচ্ছে সেই ধারাগুলো ভবিষ্যতে পরিবর্তন করা যাবে না। আমি একজন আইনজীবী হিসেবে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এ ধরণের কোন ধারা সংবিধানে যুক্ত করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সামনের ভবিষ্যতে সংসদে কি আইন পাশ করবে, সেই সংবিধান তারা কিভাবে রাখবে, সেই এখতিয়ার সংসদের আছে। আজকের সংসদ সেই সংসদের হাত কোনভাবেই বেঁধে ফেলতে পারে না। কোন অবস্থাতেই তারা ঠিক করে দিতে পারে না ভবিষ্যতে একটি সংসদ কিভাবে সংবিধানকে সংশোধন করবে।

তিনি আরো বলেন, অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন কতবার আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখবো, আমরা কি কোনো সময় দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে পারবো না? আমার উত্তর খুব পরিষ্কার, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন না হবে ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকবে। মানুষকে তার ভোট দিতে সুযোগ দিতে হবে, মানুষকে তার পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করবার শক্তি দিতে হবে। যদি কোন দেশে পছন্দের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়, তাহলে সেই দেশে জনগণ কি থাকে সকল ক্ষমতার উৎস! জনগণ তাদের মালিকানা হারিয়ে ফেলেছে।

রুমিন ফারহানা বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে পর পর দুইবার কেউ রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। এমন যুগান্তকারী ঘোষণা শুধু বিএনপি দিতে পারে। আওয়ামী লীগ তো শুধু হাসিনা যতদিন জীবিত থাকবে ততদিন পর্যন্তই তারা ক্ষমতায় থাকবে, তাদের ভাব দেখলে এমন মনে হয়।

এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল। উপস্থিত ছিলেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুল হক সায়েদ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম, রফিক শিকদার, সালাউদ্দিন শিশির, জেলা বিএনপি আহবায়ক জিল্লুর রহমান প্রমুখ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //