ডলার সংকটের প্রভাব রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে

বাগেরহাটে কয়লা সংকটে বন্ধ রয়েছে বহুল আলোচিত-সমালোচিত রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। কবে নাগাদ আবার উৎপাদন শুরু হবে, সে বিষয়েও নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিরা। ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র খুলতে না পারায় কয়লার আমদানি বন্ধ আছে। এর জেরে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর ১৭ ডিসেম্বর রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু করে কর্তৃপক্ষ। উৎপাদন শুরুর ২৭ দিনের মাথায় ১৪ জানুয়ারি কয়লা না থাকায় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও কেন্দ্র দেখভাল ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বন্ধ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শর্ত অনুযায়ী, রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে ক্রয় করে পিডিবি। তবে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও পিডিবিকে কেন্দ্রের সক্ষমতা ব্যয় বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে। যার কারণে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই কেন্দ্র নিয়মিত চালু রাখতে প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টন কয়লা লাগত। এ কেন্দ্রের জন্য কয়লা আসত ইন্দোনেশিয়া থেকে। সুন্দরবনের পশুর চ্যানেল হয়ে কেন্দ্রটির জেটিতে আসত এই কয়লা। কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো।

এর মধ্যে ৪৫০- মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে ঢাকায় এবং অবশিষ্ট খুলনায় সরবরাহ করা হতো। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ কয়লা আসবে, আর উৎপাদন শুরু হবে সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। শুনেছি ডলার সংকটে এলসি করা যাচ্ছে না। যার ফলে কয়লা আমদানিতে দেরি হচ্ছে। 

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক কয়লা আমদানিতে এলসি খোলার অনুমোদন দিচ্ছে না। যার কারণে কয়লা আমদানি করা যাচ্ছে না। বিষয়টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) জানানো হয়েছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন। তবে বিষয়টির সুরাহা হয়নি। শেষ কয়েক দিন জরুরি রিজার্ভের কয়লা দিয়ে উৎপাদন চালু রাখা হয়েছিল। তা-ও শেষ হওয়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার মজুদ সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। এ জন্য বাধ্য হয়ে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে।

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নামে বহুল পরিচিত মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আনোয়ারুল আজীম বলেন, কয়লা না থাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানি করা যাচ্ছে না। তবে এই সংকট খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //