দুর্নীতির দায়ে বিসিসির দুই প্রকৌশলীসহ ৬ জন চাকরিচ্যুত

দায়িত্ব অবহেলা, অবৈধভাবে ঠিকাদারকে সুবিধা পাইয়ে দিতে উৎসুক গ্রহণসহ বিভিন্ন অপরাধে দুদিনে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের দুই প্রকৌশলীসহ ছয়জনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নির্দেশে গত শনি এবং রবিবার পৃথকভাবে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয় বলে জানিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস।

চাকরিচ্যুতরা হলেন- সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখার চুক্তিভিত্তিক সহকারী প্রকৌশলী বাকি উল্লাহ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম, চুক্তিভিত্তিক এস্টেমিটার শাওন আকন, অস্থায়ী ভিত্তির কার্য সহকারী শাহ জালাল, কর আদায় শাখার সহকারী নূর হোসেন ও শাহিন হোসেন।

এদের মধ্যে কর আদায় শাখার সহকারী নূর হোসেন ও শাহিন হোসেনকে গত রবিবার চাকরিচ্যুত করা হয়। বাকি চারজনকে আগের দিন রাতে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস জানান, সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে পাঁচ বছরের গ্যারান্টিতে নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধানগবেষণা সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।

গত শনিবার বিকালে আকস্মিকভাবে ওই সড়কের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে যান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। এসময় তিনি সড়ক উন্নয়ন কাজে নিম্নমানের ইটের ব্যবহার দেখে ক্ষুব্ধ হন।

সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ রয়েছে। অথচ অভিযুক্তরা পুরো ৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার সড়কেই বড় বড় খানাখন্দ দেখিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি প্রাক্কলন তৈরি করেন বলে সন্দেহ করেন মেয়র।

এজন্য শনিবার রাতে সড়ক পুনর্নির্মাণ কাজের সাথে সম্পৃক্ত সহকারী প্রকৌশলী বাকি উল্লাহ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম, এস্টেমিটার শাওন আকন, কার্য সহকারী শাহ জালালকে ওইদিন রাতে নগরীর কালিবাড়ি রোড সেরনিয়াবাত ভবনে নিজ বাসায় ডাকেন মেয়র। তাদের এই অনৈতিক কাজের জন্য তাদের প্রতি ক্ষোভ জাড়ের এবং তাদের চাকরিচ্যুত করার জন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

অপরদিকে, সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি হোল্ডিং নম্বরের অনুকূলে গ্রাহকের কাছ থেকে তিন অর্থ বছরের টাকা গ্রহণ করেন সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখার আদায় সহকারী নূর হোসেন। কিন্তু তিনি সিটি কর্পোরেশনের কোষাগারে এক অর্থ বছরের টাকা জমা দেন। বাকি টাকা সে আত্মসাৎ করে বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেন।

তবে কর আদায় শাখার লেজার পোস্টিংয়ের সময় বিষয়টি ধরা পরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে। এ অপরাধে ওই শাখার আদায় সহকারী নূর হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানান প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস।

এছাড়া ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অপর এক ব্যক্তির ১০টি হোল্ডিংয়ের অনুকূলে ধার্যকৃত কর কমিয়ে দেন সিটি মেয়র। তার পরেও কর আদায় সহকারী শাহিন হোসেন ওই ব্যক্তির কাছ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা অবৈধভাবে আদায়ের পরে আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকেও সিটি কর্পোরেশন থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, অনিয়ম এবং দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় দুদিন দুজন প্রকৌশলীসহ ছয়জনকে সিটি কর্পোরেশন থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের এ সংক্রান্ত চিঠি প্রদান করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //