তিন যুগ ধরে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত ৫০ গ্রামের মানুষ

হাওরের মধ্যে ছোট গ্রাম। গ্রামের আশপাশে ছোট ছোট ৫০টি গ্রাম থাকলেও কোনোটা এক থেকে দুই কিলোমিটার আবার কোনোটা আরও বেশি দূরে। তবে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। চারপাশ বর্ষার পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়, তখন নৌকা হয় একমাত্র ভরসা। আর শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্য থাকলেও নেই কোনো সুযোগ সুবিধা। 

তবে গ্রামটিতে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ছিল। কিন্তু তাও প্রায় তিন যুগ ধরে বন্ধ। ফলে সুচিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন অর্ধশতাধিক গ্রামের গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্করা। আর বাড়ছে ঐসব এলাকায় হাতুড়ে ডাক্তার ও কবিরাজের জমজমাট ব্যবসা। 

সংশ্লিষ্টরা ঐসব গ্রামের অবহেলিত মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতে কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করছেন না বলে অভিযোগ করে গ্রামের মানুষ দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীনতাকেই দায়ী করছেন। আর সরকাররে চিকিৎসাসেবা হাতের কাছে পৌঁছে দেওয়ার যে উদ্দেশ্য তাও বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

জানা যায়, ১৯৬০ সালের দিকে পাঠাবুকা গ্রামসহ আশপাশের অর্ধশতাধিক গ্রামের সকল বয়সের মানুষের জন্য একটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র স্বাস্থ্যসেবার জন্য চালু করা হয়। ১৯৮৪ ও ১৯৮৮ সালের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার পর থেকে প্রতিঠানটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। 

সরজমিনে স্থানীয় এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের পাঠাবুকা, লামাগাও, সোলেমানপুর, ভবনীপুর, মানিকখিলাসহ ৫০টি গ্রাম টাঙ্গুয়ার হাওর, মহালিয়া, কানামুইয়া, গুরমাসহ বেশ কয়েকটি হাওর দ্বারা বেষ্টিত। গ্রামগুলোর চারপাশ বছরের ছয় মাস গভীর পানিতে নিমজ্জিত থাকে। 

বর্ষায় লোকজনের যাতায়াত মাধ্যম নৌকা আর ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল বা পায়ে হাঁটা পথ। উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ওই সব গ্রামের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। চিকিৎসার প্রয়োজনে ইউনিয়নবাসীকে উপজেলা সদরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অথবা পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা, ধর্মপাশা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়। 

এছাড়াও জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার মো. জসিম উদ্দিন জানান, পাঠাবুকা পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখানে চিকিৎসাসেবা চালু হলে মানুষ খুবই উপকার পাবে।

সুনামগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিকাশ কুমার দাশ জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে খোঁজ নিয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //