শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর শুরু

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় দেশটির দুটি সশস্ত্র সংগঠনের সংঘর্ষে বসতবাড়ি পুড়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের উখিয়ার কুতুপালংয়ে হস্তান্তর শুরু হয়েছে।

আজ রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে প্রথম দফায় বান্দরবান সীমান্তের তুমব্রু গ্রাম থেকে তাদের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসা হয়। এর পর দুপুর ১২টার দিকে সেখানে টোকেনের মাধ্যমে পরিচয়পত্র দিয়ে বাসে করে কুতুপালংয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ট্রানজিট পয়েন্টে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

তিনি জানান, তুমব্রুতে আশ্রয় নেওয়া শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই শেষে প্রথম দফায় একটি দল হস্তান্তর শুরু হয়েছে। সেখানে মোট ৫৬২ পরিবারের দুই হাজার ৯৭০ রোহিঙ্গার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম দিনে ৩৭ পরিবারের ১৮০ জন রোহিঙ্গাকে উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর করা হবে।

আরআরআরসি আরো জানায়, এসব রোহিঙ্গাদের মধ্য যাদের তথ্য বিভিন্ন ক্যাম্পে আগে থেকে অন্তর্ভুক্ত আছে, তাদের সেসব ক্যাম্পে পাঠানো হবে। বাকিদের নতুন করে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ ও ছবি তোলার কাজ শুরু করা হবে। এর পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাইয়ের কাজে দায়িত্বে ছিলেন উখিয়া ক্যাম্প-৫ এর ইনচার্জ (সিনিয়র সহকারী সচিব) প্রীতম সাহা। তিনি বলেন, প্রথম দিনে আমদের ৪০ এর কাছাকাছি পরিবারের প্রায় ২০০ রোহিঙ্গাকে উখিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে সেখান থেকে যাদের তথ্য আগে থেকেই অন্য ক্যাম্পে অন্তর্ভুক্ত করা আছে তাদের সেই ক্যাম্পে পাঠানো হবে। আর অন্যান্যদের তথ্য নতুনভাবে সংগ্রহ করে ক্যাম্পে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সকালে তুমব্রু বাজারে আশ্রয় নেওয়া শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়। পরে সেখানে সিআইসির মাধ্যমে তাদের টোকেন দিয়ে বাসে করে কুতুপালংয়ে পাঠানো হয়। বাকিদেরও একই প্রক্রিয়ায় পাঠানো হবে।

এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) মধ্যকার সংঘর্ষে অন্তত একজন নিহত হন আর শূন্যরেখার শিবিরে আগুনে পুড়ে বসতবাড়ি হারিয়ে তুমব্রু গ্রামে প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়।

উল্লেখ্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি একটি কমিটি ওই রোহিঙ্গাদের তথ্যসংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষে তাদের হস্তান্তর কার্যক্রম শুরু করে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //