ফসলি জমি ধ্বংসের মহোৎসব

মানিকগঞ্জে বিরামহীনভাবে চলছে মাটি খেকোদের রমরমা বাণিজ্য। তাদের ফাঁদে পড়ে কৃষক চাষের পরিবর্তে জমির টপ সয়েল ও ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এতে ফসলি জমির উর্বরাশক্তি যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনই মাটি পরিবহনের সময় আশপাশের জমির ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গ্রামীণ পাকা ও কাচা সড়কে রাত দিন শত শত মাটির ট্রাক যাতায়াতের ফলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট।

সিংগাইর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই রাতদিন কৃষি জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। মাটি ব্যবসায়ীদের দাপটে স্থানীয় কৃষক মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না, উল্টো তাদের ফাঁদে পড়ে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া কৃষি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। আবাদি কৃষি জমি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে হতাশা লক্ষ করা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চারিগ্রাম ইউনিয়নের চর-দাসরহাটি, বরাটিয়ার চক, ভুইতার চক ও বরাটিয়া জামসা নদীর পাড় সংলগ্ন জমিতে মাটি কাটা হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপন বলেন, সিংগাইরে প্রতিবছর ব্যাপক পরিমাণে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। যার কারণে দিন দিন আবাদি জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে কৃষি উৎপাদন ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। এখনই কৃষি জমি রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জালাল উদ্দিন বলেন, কৃষি জমি থেকে মাটি বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। যারা এসব অন্যায় করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।

ফসলের মাঠে মাঠে এখন খননযন্ত্রের বিকট আওয়াজ। ফসলের ক্ষেতে এত যন্ত্রের চলাফেরা মানুষ পাঁচ বছর আগেও দেখেনি। কেউ বলছে বড় বড় সেতু আর চার লেনের রাস্তা বানাতে বিনা শুল্কে আনা খননযন্ত্রের উচ্ছিষ্ট এগুলো। ঠিকাদারদের হাত গলে এখন কৃষিজমিতে। ফসলি জমি ‘জবাইয়ের’ এ রকম কত যন্ত্র এখন জমি বধে ব্যস্ত, তার হিসাব কারও কাছে নেই।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //