বাগেরহাটে বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী কারাগারে

বাগেরহাটে নাশকতা মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক আকরাম হোসেন তালিমসহ ৩০ নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত।

আজ শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাগেরহাট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বেলাল হোসেন গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এর আগে বাগেরহাট সদর পুলিশ ফারির এসআই সৈয়দ আবু সুফিয়ান বাদী হয়ে ৪৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩০-৪০ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে ‘পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নষ্টের প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। সেই লক্ষ্যে সাধারণ জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন, জনগণকে বিভ্রান্ত করাসহ বাসাবাটি বিদ্যুৎ সাবস্টেশন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সমূহে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিজেদের দখলে রেখে গোপন বৈঠক করছিল’ মর্মে স্বীকার করেছেন।

এদিকে জেলা পুলিশ জানিয়েছে, বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য দেশীয় অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুরাতন বাজারস্থ এমএ সালামের বাসভবনে অবস্থান করছে। ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ৩০ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র ও বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্যাদি উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কারাগারে প্রেরণকৃতদের অন্যান্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, কচুয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজরা আছাদুল ইসলাম পান্না, বিএনপি নেতা শেখ শাহেদ আলী রবি, যুবদল নেতা আইয়ুব আলী মোল্লা বাবু, জয়নুল পারভেজ সুমন ও নাছিম অন্যতম।

এদিকে বিএনপির দাবি সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম ও কর্মসূচি থেকে দূরে রাখতে পুলিশ দমন পীড়ন চালাচ্ছেন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের আটক করে মিথ্যা নাশকতা মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেছে। এদিন বেলা ১১টায় বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন বিএনপির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. ওবায়দুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, সদস্য কামরুল ইসলাম গোড়া, ব্যারিস্টার জাকির হোসেন, অহিদুল ইসলাম পল্টু প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে পদযাত্রা বাঞ্চাল করতে পুলিশ গতরাত থেকেই আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি করেছে। সকালে পুরাতন বাজার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাঁধা প্রদান করে। পুলিশের বাঁধায় নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালামের মুনিগঞ্জস্থ বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, এমএ সালামসহ কয়েকজনকে আটক করে। এছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে আরো বেশকিছু নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। সরকার আমাদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে।

কেন্দ্রীয় বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা পদযাত্রা শুরু করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাঁধা প্রদান করে। কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাসহ ৩০ জনকে আটক করে মিথ্যা নাশকতা ও ককটেল উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এটা ক্ষমতাসীনদের নির্দেশে করেছে। আমরা পুলিশের এই অন্যায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।  অতিদ্রুত এসব নেতাকর্মীদের মুক্তি দেওয়ার আহবান জানান।

বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশ পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম বলেন, নাশকতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে আমরা ৩০ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। আটককৃতদের কাছ থেকে ককটেল সদৃশ্য বোমা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনে মামলা দায়ের পূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে আটককৃতদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //