পুঠিয়ায় ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ, নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভাসহ ছয়টি ইউপি এলাকায় বছরের পর বছর চলছে অবৈধ ইটভাটা। ইটভাটা সমিতির নেতারা মালিকদের থেকে চাঁদা তুলে সেই টাকায় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ভাটা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অবৈধ এসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে গাছ, ব্যবহার হচ্ছে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি। এতে ক্ষতি হচ্ছে কৃষি জমি ও ফসলের। কাঠ পুড়ানোই ভাটার দূষিত গ্যাস, তাপ ও ছাইয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুঠিয়া পৌরসভা কার্যালয়ের ২০০ মিটার দূরে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ ভাটা পরিচালনা করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দাপটের সঙ্গে চলছে ভাটার কার্যক্রম।

ইটভাটা সংলগ্ন এলাকার মেজবাহ বলেন, আগে জমিতে অনেক ধান হতো। কিন্তু পাশে ভাটা হওয়ার দুই থেকে তিন বছর ধরে ধান আর ভালো হয় না। তাই বাধ্য হয়ে এখন জমি ফেলে রেখেছি।

গাছ দিয়ে ইটভাটা চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা বলেন, কয়লার অনেক দাম, তাই গাছের ডালপালা দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট।

এক ইটভাটা মালিকের দাবি, তিনি সবাইকে ম্যানেজ করেই চালাচ্ছেন তার ইটভাটা। অপর এক ইটভাটার ম্যানেজার শামীম হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কয়লার দরকার নেই, গাছ (খড়ি) দিয়ে ইট পুড়ানোর অনুমতি রয়েছে আমাদের।

এ বিষয়ে জানতে বিবিএফ ইটভাটার মালিক আইয়ুব আলী বলেন, দেশের সকল ইটভাটাতেই গাছ পোড়ানো হয়। সবখানে ম্যানেজ করেই আমার ইটভাটা চলছে। আমরা সরকারকে সবচেয়ে বেশি ভ্যাট ট্যাক্স দিয়ে কাজ করছি। গাছ দিয়ে ইটভাটা চালানোর অনুমতি আছে বলেই আমরা ইটভাটায় গাছগাছালি পোড়াচ্ছি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, আমাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে অবৈধ ইটভাটা চলবে কথাটি সঠিক নয়। আমরা অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। এটি অব্যাহত থাকবে। ওই এলাকায় (পুঠিয়া) অবৈধভাবে চালাচ্ছে এমন ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এদিকে অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //