মায়ের পরকীয়ায় প্রাণ গেল দুই শিশুর

মায়ের পরকীয়ায় ঢাকার রাজাবাড়ি গার্ডেন পার্কের সুইমিংপুলের পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই ভাই-বোনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রবিবার (১২ মার্চ) গভীর রাতে ময়না তদন্ত শেষে নোয়াখালী বেগমগঞ্জের নরোত্তমপুর গ্রামের নিজ পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

এর আগে, গত শনিবার (১১ মার্চ) বিকেলে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজাবাড়ি এলাকার ‘গার্ডেন পার্কে’ এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হাফিজা আক্তার (৬) ও তানজিল হোসেন (৩) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নোরত্তমপুর গ্রামের মোখলেসুর রহমানের সন্তান।  

নিহত শিশুদের পিতা মিরাজ জানান, তিনি গত এক বছর যাবত পরিবার নিয়ে ঢাকার গন্দাবাগে বাসা ভাড়া করে বসবাস করে আসছেন। গত শনিবার তিনি কাজে যান। কাজ থেকে সন্ধ্যায় ফিরে এসে দেখেন বাসায় তালা। কিছুক্ষণ পর তার ঠিকাদার তাকে ফোন করে বলেন বরিশালের বাসিন্দা তার পাশের বাসার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাসের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। তাকে ফোন করলে সে বলে কদমতলী যাওয়ার জন্য। সেখানে যাওয়ার পর একটি অ্যাম্বুলেন্স আসে। সে অ্যাম্বুলেন্সে আমার সন্তান হাফিজা ও তানজিলের মরদেহ রাখা ছিল। সেখানে ছিল আমার স্ত্রী জিন্নাত বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক জুলহাস। সেখানে আমার স্ত্রীর হাতে থাকা মোবাইল নিয়ে জুলহাস পালিয়ে যান। পরে কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ এসে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠায়।

মিরাজ আরও বলেন, তার স্ত্রীর সাথে  জুলহাসের পরকীয়া প্রেম ছিল। জুলহাসের সঙ্গে পার্কে ঘুরতে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে বাচ্চা দুটিকে হত্যা করে পানিতে পড়ার নাটক সাজিয়েছেন তারা। 

পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে দুই শিশুর মা জানিয়েছে-জুলহাস নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। পরকীয়া প্রেমিক জুলহাসের সঙ্গে সময় কাটাতে দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে বিকেলে গদারবাগের বাসা থেকে রাজাবাড়ি গার্ডেন পার্কে যান। পার্কে ঢোকার পর জিন্নাত আরা দুই শিশুকে অরক্ষিত অবস্থায় ছেড়ে দিয়ে আড়ালে বেঞ্চে বসে জুলহাসের সঙ্গে সময় কাটাতে থাকেন। তবে কীভাবে তার দুই সন্তান সুইমিংপুলের পানিতে পড়েছে তা জানেন না তিনি।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত মাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার পর পালিয়ে গেছেন জুলহাস। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। পলতাক আসামিকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।