পে-অর্ডার জালিয়াতির মামলায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কারাগারে

খাদ্য বিভাগে চাল সরবরাহের জামানতে জাল পে-অর্ডার দেওয়ার অভিযোগের মামলায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানকে জেলে পাঠিয়েছেন আদালত।

উচ্চাদালতের নির্দেশে আজ বুধবার (১৫ মার্চ) বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের প্রার্থনা করলে বিচারক কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা আবেদন না মঞ্জুর করে ভাইস চেয়ারম্যানকে জেলে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতের বেঞ্চ  সহকারী মো. কামরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী খাদ্য বিভাগের পুষ্টি চাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এলাহী এগ্রো লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী। গৌরনদী উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক মুন্সীর ছেলে নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুল ইসলাম আরো জানান, ৬ ফেব্রুয়ারি কোতয়ালী মডেল থানায় ভাইস চেয়ারম্যানকে প্রধান করে ও অগ্রণী ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে আসামি করে মামলা করেন বরিশাল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক ও মামলা শাখা প্রধান মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা।

মামলার অপর দুই আসামি হলেন- অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকার পোস্তগোলা শাখার ব্যবস্থাপক আলী রেজা (৫২) এবং অগ্রণী ব্যাংকের আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সার হাট শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক অম্লান বিশ্বাস।

মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারনামূলকভাবে জাল পে-অর্ডার প্রস্তুত করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

বেঞ্চ সহকারী বলেন, মামলার আসামি হিসেবে ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুন্সী উচ্চাদালত থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন নেয়। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর উচ্চাদালতের নির্দেশে এক সপ্তাহ পূর্বে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়। বিচারক তাকে জামিন দিয়ে নথি তলব করে জামিনের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে শুনানির দিন ধার্য্য করেন।

বুধবার ধার্য্যদিনে আদালতে হাজির হন ভাইস চেয়ারম্যান। বিচারক মামলার অভিযোগের গুরুত্ব আমলে নিয়ে জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

আদালতের সরকারী নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এনামুল হক বলেন, মামলার অপর দুই আসামি ব্যাংক কর্মকর্তা অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে রয়েছেন।

মামলার বরাতে জিআরও বলেন, পুষ্টি চাল সরবরাহের চুক্তিভিত্তিক মিলার হলো এলাহী এগ্রো লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত মোট ১১টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকার জামানত দেয়, পরে যা যাচাইয়ে ভুয়া প্রমাণিত হয়। এই ১১টি পে অর্ডারের বিপরীতে প্রকৃতভাবে জমা দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ২০০ টাকা। অর্থাৎ ২ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ব্যাংকে ১০০ টাকা জমা দিয়ে তৈরি করা হয় ১ কোটি ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫০৪ টাকার একটি পে-অর্ডার; ২০০ টাকা জমা দিয়ে তৈরি করা হয় ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকার একটি পে-অর্ডার এবং ৬ হাজার টাকা জমা দিয়ে তৈরি করা হয় ৬ লাখ টাকার একটি পে-অর্ডার। এভাবে অন্য আটটি পে-অর্ডারেও জালিয়াতি করে বানানো পে-অর্ডার খাদ্য বিভাগে জমা দেয় এলাহী এগ্রো।


মামলায় আরো বলা হয়, ভুয়া এসব পে-অর্ডারের মধ্যে ছয়টি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক সোনারগাঁও শাখা নারায়ণগঞ্জ থেকে, চারটি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক পয়সারহাট শাখা এবং একটি করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংক বাটাজোড় শাখা থেকে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //