দক্ষিণাঞ্চলে আমন ধান-চাল সংগ্রহে ব্যর্থ খাদ্য বিভাগ

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ অঞ্চলের প্রায় সাত লাখ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এ পরিমাণ জমিতে ২০ লক্ষাধিক মেট্রিক টন আমন উৎপাদন হয়েছে।

আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য বিভাগ। তারা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক ধান-চালও ক্রয় করতে পারেনি। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা থেকে কৃষকের কাছ থেকে ৪৮ হাজার ৬৪৩ দশমিক ৯৪ মেট্রিক টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ থাকলেও সেখানে অর্জিত হয়েছে মাত্র ১০ হাজার ৮৮৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। আর বিভাগের পিরোজপুর জেলায় এক কেজি চালও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ।

এদিকে গত বছরের ১৭ নভেম্বর বরিশাল অঞ্চলে শুরু হওয়া ধান এবং সিদ্ধ চাল সংগ্রহের শেষ দিন ছিল গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জন না হওয়ায় ৭ মার্চ পর্যন্ত সংগ্রহের সময় বর্ধিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলনের পাশাপাশি কৃষককে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে প্রতিবছরের মতো এবারও সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ করা হয়।

খাদ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া চাহিদাপত্র অনুযায়ী বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা থেকে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ১৭ হাজার ৯০২ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৩০ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হবে। এ জন্য প্রতি কেজি ধানের মূল্য ২৮ টাকা এবং চালের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয় ৪২ টাকা। যা বর্তমান বাজার মূল্যের থেকে অনেক কম। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ধানের মূল্য প্রকার ভেদে সর্বনিম্ন ৩০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি চালের মূল্যও সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি।

বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত বছরের ১৭ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা থেকে এক হাজার ১০৩ দশমিক ১৬০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা গেছে। একইভাবে সিদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৯ হাজার ৭৮০ দশমিক ৩৪০ মেট্রিক টন।

খাদ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রার ২৯ হাজার ৬৩৪ দশমিক ৮৪ মেট্রিক টন এবং সিদ্ধ চাল চার হাজার ১২১ দশমিক ৬ মেট্রিক টন কম সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে পিরোজপুর জেলায় সংগ্রহের পরিমাণ শূন্য। তাছাড়া বরগুনা জেলায় ৫ দশমিক ৪৪ মেট্রিক টন এবং ঝালকাঠি জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র ১৫ টন ধান। অবশ্য বিভাগের ছয় জেলা থেকে কম-বেশি সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে দপ্তরটি।

বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরকারের মূল্য লক্ষ্য হচ্ছে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। এ কারণেই একটি মূল্য নির্ধারণ করে সরকারিভাবে ধান-চাল ক্রয় করা হয় কৃষক এবং মিল মালিকদের কাছ থেকে। যে কারণে আর যা-ই হোক বাজারে সরকারি মূল্যের থেকে কম দামে ধান-চাল বিক্রি করতে পারেনি। তাই কৃষকরাও তাদের ন্যায্যমূল্য পেয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //