সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুইটি পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের পরীচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া পদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আবেদনকারী সদস্য ও স্কুলের অভিভাবকরা।
জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ প্রতাপনগর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ১৯৬২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে শিক্ষা দান করে আসছে। বর্তমান বিদ্যালয় ৩৫১ জন ছাত্রছাত্রী। ১৩জন শিক্ষক ও তিনজন কর্মচারী রয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি পরিছন্নতা কর্মী ও আয়া পদে জাতীয় কাগজ মানবজমিন ও সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দরখাস্ত আহবান করা হয়। সেই অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদের ১১ জন ও আয়া পদে সাত জন প্রার্থী আবেদন করেন। কিন্তু পরীক্ষা ছাড়াই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান ও প্রধান শিক্ষক জয়দেব কুমার দাস তাদের পছন্দের দুই প্রার্থীর কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে বালি ভরাট করার কাজ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিছন্নতা কর্মী পদে আবেদনকারী প্রার্থী মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী জানান, নিয়ম অনুযায়ী পরিছন্নতা কর্মী পদে আবেদন করি। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক আমার চেয়ে বেশি বয়সের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান পলাশের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ গ্রহণ করে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পলাশ ও আয়া পদে আসমা খাতুনের কাছ থেকে পরীক্ষার আগেই ২০ লাখ টাকা নিয়ে মাঠে বালি ভরাটের কাজ করছেন।
আয়া পদে আবেদনকারী প্রার্থী ফিরোজা খাতুন জানান, পরীক্ষার আগেই যদি পছন্দের প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া হয়। তাহলে আর পরীক্ষার দরকার কি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী জানান, অনেক আশা নিয়ে চাকরির জন্য বিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলাম। আবেদন জমা দেওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে বলে জানালেও এখন প্রতিটি পদের জন্য দশ লাখ করে টাকা নিয়ে তাদের চাকরি দিচ্ছে।
আরেক প্রার্থী জানান, আমি গরীব মানুষ। একটা পদে দরখাস্ত করেছিলাম। কিন্তু এখানে যেভাবে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু হয়েছে তাতে আমার যোগ্যতা থাকলেও আমার চাকরি পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। এ বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়দেব কুমার দাশ জানান, আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছি। কোন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া কথা আমার জানা নেই। তবে সভাপতির নিজস্ব অর্থ দিয়েই মাঠে বালি ভরাটের কাজ চলছে। এর বাইরে আমার কিছু জানা নেই।
তবে অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মোবাইলটি বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম সাম্প্রতিক দেশকালের প্রতিনিধিকে জানান, আপনার মুখ থেকেই প্রথম ওই স্কুলের সৃষ্ট পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে সেটি জানলাম। আমার কাছে এই ধরনের অভিযোগ এখনো কেউ করেননি। এ ধরনের কোন অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh