লোকসানে খামারিরা

অবিশ্বাস্যভাবে পোল্ট্রি মুরগির দাম বাড়লেও লোকসান গুনতে হচ্ছে ময়মনসিংহের খামারিদের। তাই অনেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন তাদের ব্যবসা। বিদ্যুতের দামবৃদ্ধিসহ খাদ্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় মুরগির বাজার চড়া বলছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে ময়মনসিংহ জেলায় পোল্ট্রি খামারি রয়েছেন ১১ হাজার ৬০৯ জন। যেখানে জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলাতেই ৫ হাজার ১২০ জন পোল্ট্রি খামারি মুরগি পালন করছেন। 

খামারিরাও বলছেন, লোডশেডিং, বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি এবং ধারাবাহিকভাবে পোল্ট্রি ফিড, ওষুধের দাম বাড়ায় চরম বেকায়দায় তারা।

ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের কান্দানিয়া ফরিদের পাড় গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মো. সজীব মিয়ার মতো অনেক খামারি এখন হতাশ মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধিতে। চলতি সপ্তাহেই ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি ফিডের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা। 

খামারি মো. সজীব মিয়া বলেন, কয়েক মাস আগেও ৫০ কেজির বস্তা প্রতি ফিড কিনেছি ৩ হাজার ৩০০ টাকা। এখন সেটা কিনতে হচ্ছে ৩ হাজার ৭৫০ টাকায়। ধারাবাহিকভাবেই ফিড মালিকরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এভাবে যদি দাম বাড়তেই থাকে তাহলে খামার করা বাদ দিতে হবে। মুরগির দাম বাড়ছে এটাই শুধু মানুষ দেখছে কিন্তু খাবারের দাম যে ক্রমান্বয়ে বাড়াচ্ছে সেই সিন্ডিকেটটা কেউ দেখে না। সেটা তদারকি কেউ করে না।

সদর উপজেলার দাপুনিয়া গ্রামের খামারি আনোয়ার পারভেজ বলেন, পোল্ট্রি মুরগির একটা বাচ্চা আমাদের কিনতে হয় প্রায় ৫০ টাকায়। তারপর খাবার খাইয়ে বড় করতে হয়। দিনে প্রায় সময় বিদ্যুৎ থাকে না। লোডশেডিংয়ের কারণে জেনারেটর ব্যবহার করতে হয়। ডিজেলের দাম লিটারে বেড়েছে ৩৪ টাকা। খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কথা তো বলাই লাগে না। তাহলে আমাদের লাভ কোথায়?

তা খুঁজে পাই না। এখন ব্যবসা না পারছি ছাড়তে না পারছি ধরে রাখতে। সরকার ঘোষণা দিয়েছে রাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকবে কিন্তু কই আমরা তো এর সুফল পাচ্ছি না। পোল্ট্রি মুরগি ৩০০ টাকা কেজি হলেও আমাদের লাভ খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমারী খাতুন বলেন, ইউক্রেন থেকে মুরগির প্রচুর খাদ্য উপকরণ আসত। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সাপ্লাই চেইন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সাপ্লাই কমে যাওয়ায় ডিমান্ড বেড়ে গেছে। ফলে দামও বেড়ে গেছে। এতে খামারিদের বাধ্য হয়েই দাম বাড়াতে হয়েছে। 

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের বলেন, মুরগির বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা মনিটর করছি। সারাদেশেই একই চিত্র। কোম্পানি সিন্ডিকেটের ব্যাপারে জাতীয়ভাবে যে মনিটর করা হয় সেখানে তো আমাদের কিছুই করার থাকে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //