প্রকাশ্যে ১২ বস্তা ভিজিএফের চাল ছিনতাই

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদে ১২ বস্তা ভিজিএফের চাল ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। যার প্রতি বস্তায় ছিল ৩০ কেজি করে চাল।

গতকাল রবিবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীরা জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুস্থ পরিবারের জন্য বিশেষ ভিজিএফ চাল বিতরণ শুরু করেছে সরকার। সুবিধাভোগীদের তালিকা করে জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে সুবিধাভোগীর তালিকা প্রণয়ন করার নিয়ম থাকলেও ওই মহিষখোঁচা ইউনিয়নে হয় ব্যতিক্রম। এই ইউনিয়নের তালিকা কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। উপজেলা চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান, এমপি ও ক্ষমতাশীল দলের নেতা এমনকি প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ভাগ করে নিয়ে তালিকা বা স্লিপ প্রদান করছেন। স্লিপ বণ্টন নিয়ে কয়েক দফা মিটিং করে উপজেলা কমিটি। অবশেষে তালিকা প্রণয়ন করা হয়। রবিবার দিনব্যাপী উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ ও ভাইস চেয়ারম্যানের অংশের ভিজিএফ স্লিপধারী সুফল ভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। বাকি উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি ও দলীয় অংশের স্লিপের চাল সোমবার স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের বিতরণের কথা রয়েছে।

রবিবার ওই মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের তালিকা ও ইউনিয়ন পরিষদের তালিকাভুক্ত সুফলভোগীদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের তালিকাভুক্তদের পর ভাইস চেয়ারম্যানের ৩৬ জনের মধ্য থেকে গোবিন্দ রায় নামে একজনের স্বাক্ষর নিয়ে ১২টি বস্তা উত্তোলন দেখানো হয়। স্বাক্ষর করা মাত্রই চালের বস্তাগুলো টেনে হেঁচড়ে ছিনিয়ে নেন স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ ও ইউপি চেয়ারম্যানের গাড়িচালক আলমগীর হোসেন। এসময় চেয়ারম্যান কোনো প্রতিকার করেননি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। পরে চাল না পেয়ে ফিরে যায় বঞ্চিত ৩৬ দুস্থ পরিবার।

ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রথম দিকে ৩টা স্লিপ দিয়ে এক বস্তা চাল দিতে চেয়ারম্যান আমাদের ১২জনকে ডাকেন। পরে চেয়ারম্যানের গাড়িচালক বলেন ৩৬ জনকেই লাগবে। পরে ৩৬ জনের মধ্য থেকে একজনের স্বাক্ষর নিয়ে ১২ বস্তা চাল গুদাম থেকে বের করা মাত্রই চেয়ারম্যানের ড্রাইভার আলমগীর আর আহাদ তা কেড়ে নেয়।

মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, তারা স্লিপ পাঠালেও লোক পাঠাতে পারেনি। তবুও ভাইস চেয়ারম্যানের প্রতিনিধির হাতে ১২ বস্তা বুঝিয়ে দিয়েছি। তাদের সামনে চালের বস্তাগুলো নিয়ে গেলো। ভেবেছিলাম তারা হয়তো চাল বিক্রি করেছে। এখন সুফলভোগীরা চাল না পেলে আমার কিছু করার নেই।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন আক্তার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের তালিকাভুক্ত এবং রেজুলেশনভুক্ত সুফলভোগীদের স্বাক্ষর নিয়ে চালের বস্তা গায়েব করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ সবাইকে অবগত করা হয়েছে।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিআর সারোয়ার বলেন, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ২১ হাজারের বেশি পরিবারকে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। চাল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //