ছাত্রলীগের কমিটিতে শিবির ও ছাত্রদল কর্মী রাখার অভিযোগ

মাদারীপুরের মস্তফাপুর ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিতে জামায়াত-শিবির, ছাত্রদল কর্মী ও অছাত্ররা স্থান পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগের কর্মী ও সমর্থকেরা।

আজ সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে মস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলন সূত্র জানায়, গত ১৪ মার্চ মস্তফাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মনজুর হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিলন হাওলাদার। যা ১৩ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়। এতে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে আবদুল্লাহ আল-মামুন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজী মিসবাউলকে মনোনীত করা হয়। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মীদের অভিযোগ, নবগঠিত কমিটিতে সভাপতি পদে স্থান পাওয়া আবদুল্লাহ আল-মামুন কখনো ছাত্রলীগের রাজনীতি করেননি, তিনি একটি স্কুলের নৈশ প্রহরী ও ছাত্রশিবিরের অনুসারী। সাধারণ সম্পাদক কাজী মিসবাউল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী নয়, তিনি ঢাকার একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। সহসভাপতি রিফাতুল ইসলাম ওরফে রিফাত ছাত্রদল কর্মী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তালিপ হোসেন ওরফে আবির অছাত্র। এছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ছফিউল্লাহ বিবাহিত। 

এসময় ছাত্রলীগের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনজুর হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিলন হাওলাদার ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে আর্থিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা দিয়েছেন যা দুঃখজনক।

ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী শেখ জিহাদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছি।  আমি এই ইউনিয়নের সভাপতি পদের দাবীদার। কিন্তু আমাকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। কিন্তু যাকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয়েছে তিনি একজন নৈশ প্রহরী ও বিভিন্ন সময় ছাত্রশিবিরের পক্ষ ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। এছাড়াও কমিটির অনেকে ছাত্রদল কর্মী ও অছাত্র। আমরা এই কমিটি বাতিলের পাশাপাশি নতুন করে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের অনুরোধ জানাই।

মস্তফাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বলেন, এই কমিটিতে ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হয়েছেন। আমি এটাও বিশ্বাস করি, আর্থিক সুবিধা নিয়ে এই কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে যা তদন্ত করলেই উঠে আসবে। নতুবা ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল কর্মীদের পদ পাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। 

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিলন হাওলাদার বলেন, ছাত্রলীগ বড় একটি সংগঠন। এখানে সবাইকে পদে রাখা সম্ভব না। যারা পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তারা ক্ষোভে এ ধরনের মন্তব্য করছেন। কমিটি নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে অবশ্যই আমাদের জানাতে হবে। আমরা প্রয়োজনে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিক বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগ ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমন্বয়ে কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ছাত্রদল বা শিবির কর্মীদের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে এ বিষয়ে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //