পরিচয় নিশ্চিতে কক্সবাজারে উদ্ধার ১০ মরদেহের ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ

কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ভেসে আসা ট্রলারের কোল্ডস্টোর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ১০ মরদেহের পরিচয় এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। পরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ সংরক্ষণ ও পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। 

ধারণা করা হচ্ছে, গত ৭ এপ্রিল  সাগরে গিয়ে নিখোঁজ থাকা ১৪ জেলের মধ্যে ১০ জনের মরদেহ হতে পারে এসব।

গতকাল রবিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরের দিকে একটি ট্রলার ভেসে আসার পর সেখানে মরদেহ দেখে পুলিশকে জানায় স্থানীয় জেলেরা। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ গিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করে। 

কক্সবাজারের মহেশখালী ও পেকুয়া উপজেলার জেলেদের দেওয়া তথ্য মতে, গত ৭ এপ্রিল মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার মৃত রফিক আলমের ছেলে শামসুল আলম তার নিজস্ব মালিকানাধীন একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ১৪ মাঝিমাল্লাসহ সাগরে মাছ ধরতে যান।

এর ৩ দিন পর ১০ এপ্রিল সাগর থেকে মাছ ধরে ফিরে আসা কালারমারছড়া ইউনিয়নের আঁধারঘোনা গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে বাবু জানান, ওই ট্রলারের ১৪ মাঝিমাল্লা অপর একটি ট্রলারে ডাকাতি করার অভিযোগে কয়েকটি ট্রলার ঘিরে আটকে ফেলে। এরপর ১৪ জনকে হিমঘরে আটকে দিয়ে ট্রলারটি ডুবিয়ে দেয়। ওই ট্রলারে বাবুর আপন ভাই হায়াত উল্লাহও রয়েছেন।

এরপর থেকে ট্রলার বোটের মালিক শামসুল আলমসহ ১৪ মাঝিমাল্লা নিখোঁজ রয়েছেন।

নিখোঁজ জেলেরা হলেন, মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের পূর্ব আঁধারঘোনা গ্রামের ছালেহ আহমদের ছেলে ২৫ বছরের আব্দুল মালেক ও ২৩ বছরের মোহাম্মদ রিদুয়ান, আব্দুস সালামের ছেলে ২৪ বছরের মো. হায়াত, দানু মিয়ার ছেলে ২৬ বছরের আব্দুল মান্নান, আকবর আলীর ছেলে ২৮ বছরের মাহবুব আলম, মো. শরীফের ছেলে ২৭ বছরের নুরুছামাদ, ছামিরাঘোনা এলাকার আবু জাফরের ছেলে ২৭ বছরের নজরুল, অফিসপাড়া এলাকার ২৫ বছর বয়সি হেলাল উদ্দিন, শাপলাপুর ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ১৮ বছরের সাইফুল ইসলাম, জাফর আলমের ছেলে ১৮ বছরের মো. শওকত উল্লাহ, মুসার ছেলে ১৭ বছরের উসমান গণি, শাহাব মিয়ার ছেলে ২৩ বছরের সাইফুল্লাহ, মোহাম্মদ আলীর ছেলে ১৩ বছরের কিশোর পারভেজ মোশাররফ এবং মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে ৪৫ বছরের নুরুল কবির। 

কক্সবাজার ফায়ারসার্ভিস স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক অতিশ চাকমা  জানান, রবিবার সকালে স্থানীয়   জেলেরা সাগরের গভীরে  ফিশিং ট্রলারটি ভাসতে দেখে উপকূলে নিয়ে আসে।  ট্রলারের ভেতরে মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয়া হয় । বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১০ জনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: রফিকুল ইসলাম  জানান, ট্রলারে মরদেহগুলোর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ছিল এবং পচে গলে বিকৃত হয়ে  গেছে। তাদের কঙ্কাল ভেসে উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে অন্তত ১৫-২০ দিন আগে তাদের মৃত্যু হতে পারে। 

সাগরে যাদের আত্মীয়-স্বজন নিখোঁজ আছে এরকম বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যাও এসেছিল শনাক্ত করতে, কিন্তু তারা কোনোভাবেই শনাক্ত করতে পারেননি।

তিনি জানান, মহেশখালীতে নিখোঁজের একটি তথ্য শোনা যাচ্ছে। তাদের খবর পাঠানো হচ্ছে। তবে মরদেহ পচে যাওয়ায় শনাক্ত করা কষ্টকর  হয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা ডিএনএ সংরক্ষণ করছি। তা পরীক্ষা করে শনাক্ত করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //