হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার নারীকে ধর্ষণ চেষ্টা

ধর্ষণের স্বীকার এক নারী মেডিকেল পরীক্ষার জন্য গিয়েছিলেন হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষার নামে ভুক্তভোগী সেই নারীকে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের কর্মী মানিকের বিরুদ্ধে। এ ন্যাকারজনক ঘটনাটি ঘটেছে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি)।

এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনায় মাইদুল ইসলাম রাব্বি ও অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মী মানিকের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে পৃথক দুইটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী।

ঈদ উপলক্ষে গত ২২-০৪-২০২৩ (ঈদের দিন) ভুক্তভোগী নারীর ভাড়া বাসায় বেড়াতে আসেন তার নিকট আত্মীয় (ভাসুর) মাইদুল ইসলাম রাব্বি। এসময় ভুক্তভোগী নারীর উপর কুনজর পরে ঐ লম্পট রাব্বির। অটোচালক স্বামী বাড়িতে না থাকায় সেদিন রাত ১০টার দিকে রাব্বি ঝাঁপিয়ে পরে ভুক্তভোগী সেই নারীর উপর। এক পর্যায়ে সেই নারীকে ধর্ষণের পর বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় লম্পট রাব্বি। পরবর্তীতে ধর্ষণের ঘটনা ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীকে জানালে ঘটনার দুইদিন পর (২৪-০৪-২০২৩) পাবনা সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামী। ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠায় পুলিশ। ভুক্তভোগী নারী হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে গেলে কিছু সময় পর শারীরিক পরীক্ষার কথা বলে ঐ নারীকে অপর একটি রুমে নিয়ে যায় হাসপাতাল কর্মী মানিক। এসময় মানিক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগী নারীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় ও ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মী মানিকের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। অভিযুক্ত মানিকের অপকর্মের কথা স্বীকার করেছেন হাসপাতালের একাধিক কর্মীও।

ন্যাকারজনক এ ঘটনায় বিব্রত চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মরত স্টাফরা। হাসপাতালের অন্য কর্মীরা জানান, এ ঘটনা ঘটার পরপরই পালিয়েছে মানিক। 

এ বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক মীর জানান, এখানে ধর্ষিতা হয়েছে এ অভিযোগটি সত্য না। তবে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে যেটা আমি জেনেছি। সে বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, একটি রেপের ঘটনা ঘটেছিল পরবর্তীতে আমরা একটি মামলা নেই। তাকে পরীক্ষার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়। পরীক্ষা শেষও হয়েছিল কিন্তু পরে আমরা শুনতে পাই ওসিসি স্টাফ তাকে যৌন নিপীড়ন করেছেন এমন অভিযোগ ছিল। আমরা তখনি ভিকটিমকে ডেকে নিয়ে ঘটনা শুনি এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পরপরই নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে ধর্ষণ মামলায় আটক হয়েছেন ভুক্তভোগী নারীর সেই নিকট আত্মীয় (ভাসুর) অভিযুক্ত মাইদুল ইসলাম রাব্বি। এখনো পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মী আব্দুল মানিক। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //