সেলফি তোলা নিয়ে ৫ গ্রামের সংঘর্ষ

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের একটি গ্রামে সেলফি তোলা নিয়ে কিশোরদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের হয়ে পাঁচ গ্রামের মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সংঘর্ষে অন্তত ৪২ জন আহত হয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত তিনজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অপর ১৫ জনকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে আলগী ইউনিয়নের সুলিনা বাজারের কুমার নদের ব্রিজের উপর নাওরা গ্রামের কয়েকজন কিশোর দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিল। এসময় একই ইউনিয়নের গুণপালদী গ্রামের এক কিশোরের মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে দুই গ্রামের কিশোরের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরে গুণপালদী গ্রামের কয়েকজন কিশোর সুলিনা বাজারে গেলে নাওরা গ্রামের কিশোররা তাদের মারধর করে। এর পরেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসী।

সংঘর্ষে এক পক্ষে গুণপালদী গ্রাম ও অপর পক্ষে নাওরা, অপরপট্টি, শুয়াদী, চান্দ্রা গ্রামবাসী অংশ নেয়। ঢাল, সড়কি, রামদা, ইটপাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

আলগী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য মজিবর মুন্সী বলেন, সুলিনা ব্রিজের উপর আমার ওয়ার্ডের নাওরা গ্রামের কয়েকজন ছেলে মোবাইলে সেলফি তুলছিল। এসময় গুণপালদী গ্রামের এক তরুণ মোটরসাইকেল চালিয়ে আসছিল। এসময় মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে সেলফি তোলা এক কিশোরের। এ নিয়ে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি হয়। পরে তা বড় সংঘর্ষের পর্যায়ে গড়ায়।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, আহত ১৮ জনকে শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) রাতে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত গুণপালদী গ্রামের  মাজেদ মোল্লার ছেলে ওবায়দুল মোল্লা (৪৬), অপরপট্টি গ্রামের আব্দুর রহমান মাতুব্বরের ছেলে আসাদ মাতুব্বর (২২), নাওরা গ্রামের হাসেম মাতুব্বরের ছেলে আজিজুল মাতুব্বরকে (৪৫) গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহত ১৫ জন ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কিশোরদের মারামারির ঘটনা পরে বড় আকারের সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। এ ঘটনায় শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //