আবহাওয়া নিয়ে আতঙ্কে হাওরবাসী

সোনালি ধানের ছড়া বাতাসে দোল খাচ্ছে। হাওরাঞ্চলে এবার ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মলিন মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। সেই খুশিতে কষ্টে ফলানো সোনালি রঙের ধান কেটে মাড়াই দিয়ে গোলায় তুলতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আপন মনে তোড়জোড় শুরু করছে সুনামগঞ্জের কৃষক।

এদিকে বৈরী আবহাওয়ার আশঙ্কায় কিছুটা আতঙ্কে আছে হাওরবাসী। এছাড়াও শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি হাওর রক্ষাবাঁধ সঠিকভাবে নির্দিষ্ট সময়ে নির্মাণ না করায় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে বাঁধ ভেঙে কষ্টের ফলানো সোনালি বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ধর্মপাশা, দোয়ারা বাজার, ছাতক, জামালগঞ্জ, দিরাই, সুনামগঞ্জ সদর, শাল্লা, জগন্নাথপুর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগরসহ ১২টি উপজেলা হাওরাঞ্চলের ৮০ ভাগ কৃষক পরিবার। তারা কৃষি কাজের মাধ্যমে বংশপরম্পরায় তাদের জীবন জীবিকা ও অতীত ঐতিহ্যের লালিত স্বপ্ন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে। এ বছর কৃষকরা একটু দেরিতে চাষাবাদ শুরু করলেও হাওরের বোরো ধানের গোছায় সোনালি রঙ ধারণ করায় কৃষকের বুকে জেগেছে সুখের প্রাণ। বৈশাখ মাস শুরু হতেই জেলার বিশাল হাওর জুড়েই আগাম জাতের বোরো ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে কৃষক।

হাওরে হাওরে ধান কাটার শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় ধান কাটার ৬৬৫টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন রয়েছে এ ছাড়াও আরও মেশিন ভর্তুকিতে কৃষকদের বিতরণ করা হবে বলে জানায় সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ছোট বড় মিলিয়ে ১৪২টি হাওরে দুই লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৬০ হাজার ৮৬০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল এক লাখ ৬০ হাজার ৫৬৫ হেক্টর ও স্থানীয় এক হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৯৫ হেক্টর বেশি। ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান চাষাবাদ হয়েছে। বেশ কিছু হাওরে আগাম জাতের ধান কাটা হচ্ছে ফলনও ভালো হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, দ্রুত হাওরের ধান কাটার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার বাইরে থেকে শ্রমিক ও কম্বাইন্ড হারভেস্টার নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে কৃষকরা তাদের কষ্টে হাওরে ফলানো সোনালি ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //