লালনের আখড়ায় হামলা, বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর

মদপান করে সাধু আশ্রমে প্রবেশ করে বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রবিবার (৭ মে) বিকাল ৩ টার দিকে নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের পুলকিত আশ্রমে এ ঘটনা ঘটে। 

এসময় হামলায় খোকন চিশতি লালন ও রিয়াদ ভূঁইয়া নামে দুই লালন শিল্পী আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।

এছাড়াও হামলায় প্রায় ১.৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি শুরু হলে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর, অভিযুক্তরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

পুলকিত আশ্রমের পরিচালক ও চট্টগ্রামের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গতকাল সাড়ে ৩ টার দিকে বাবলা গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখ (২৮) মদ খেয়ে আমাদের আশ্রমে প্রবেশ করে অশোভন আচরণ করেন। পরে আমরা প্রতিবাদ করলে তার চাচাতো ভাই ফরিদ শেখ (৩৪) ও শাহীন শেখসহ স্থানীয় আরো ৪-৫ জন ব্যক্তি লাঠি-সোটা নিয়ে আমাদের যন্ত্রপাতির উপর আক্রমণ চালিয়ে ভাঙচুর করেন। আমাদের সাধুসঙ্গের লোকজনদেরকে তারা অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন। এসময় তাদের বাধা দিতে গিয়ে খোকন চিশতি লালন ও রিয়াদ ভূঁইয়া আহত হন। 


ওই আশ্রমের আসরে যোগ দেয়া ভুক্তভোগী রনি জাবালি বলেন, আমার কিছু গানের বন্ধুরাসহ নরসিংদী জেলার বেলাবোর পুলকিত আশ্রম নামক একটা আশ্রমে সাধুসঙ্গ করি। আমি প্রায় সময় সেখানে যাই। বিভিন্ন সময় নানান জায়গা থেকে সঙ্গীত সাধকরা আসেন এবং সব সময় সঙ্গীত সঙ্গ চলতেই থাকে ওইখানে। পুলকিত আশ্রম লালন ঘরের একটি আশ্রম। গতকাল রবিবার বিকেলে এলাকার কিছু লোক এসে শিল্পীদের সকল বাদ্যযন্ত্র ভেঙে চলে যায়। এইখানে কারো কারো এই যন্ত্রই একমাত্র সম্বল ছিল। তনপোড়া, দোতারা, একতারা, বাঁশি, ডুগি, সারিন্দা ও গিটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ভেঙে ফেলায় আমাদের প্রায় দেড় ১ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়নি কিন্তু তাড়া করেছে এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। আমাদের আড্ডা ভেঙে দিয়েছেন। আমরা ভয় পেয়ে চলে এসেছি এবং সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে লেখা-লেখি করেছি। তবে, এখনো থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। 


এ ঘটনায় অভিযুক্ত কাউকে বক্তব্য দেয়ার জন্য পাওয়া যায়নি।

বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তানভীর আহমেদ বলেন, আজ সোমবার সকালে (৮ মে) ঘটনা শুনে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। প্রথমে শুনেছিলাম মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে। কিন্তু পরে তদন্ত করে দেখি ড্রাগন বাগানে একটি গানের আশ্রম বানিয়ে ছেলেরা আড্ডা দেয়। আর অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর শেখ মাতাল অবস্থায় আশ্রমে গিয়ে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এই অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর শেখকে বাধা দিলে তার আত্মীয় স্বজনদের সাথে নিয়ে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখায় এবং তাদের বাদ্যযন্ত্রগুলো ভাংচুর করেন। তবে কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তাছাড়াও অভিযুক্তরা এখন আত্মগোপনে রয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। লিখিত অভিযোগ দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //