নদীর পাড় ও ফসলি জমির মাটি বিক্রির মহোৎসব

মানিকগঞ্জে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে নদীর পাড় ও ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ীরা। রীতিমতো মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতেছে ভূমিদস্যু চক্রটি। যেন দেখার কেউ নেই। ফলে একদিকে দিন দিন ফসলি জমি শেষ হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে নদীর পাড় কাটায় বর্ষা মৌসুমে উক্ত এলাকায় সহজে বন্যাকবলিত হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

এ ছাড়াও এসব মাটি পরিবহনে ছোট রাস্তাগুলোতে ভারী ভারী যানবাহন ব্যবহার করায় সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েও মিলছে না প্রতিকার।

সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা মিতরা ইউনিয়নের ধলেশ্বরী ব্রিজের নিচে নদীর পাড় ও পাড় সংলগ্ন ফসলি, একই ইউনিয়নের গোবিন্দপুরের চক ও পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পাড় কেটে নদীর আকৃতি এবং গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে।

ফলে স্থানীয় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে পুটাইল ইউনিয়নের গুরু সেওতা, নাগরা ও চান্দরার চকের ফসলি জমি থেকেও ভূমিদস্যুরা মাটি কেটে বিক্রি করছে। এছাড়াও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বায়রা খেয়াঘাট ও আটিগ্রাম ইউনিয়নের ভগবানপুর এলাকাতেও ভূমিদস্যুরা তান্ডব চালাচ্ছে। 

ইতিপূর্বে কোনো কোনো স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করলেও ৭২ ঘণ্টা পার হতে না হতেই তারা আবার ফিরে গেছে সাবেক রূপে।

এছাড়াও মাটি বোঝাই করে কাঁচা পাকা রাস্তায় চলছে একাধিক ভারী যানবাহন। এতে করে নতুন পুরাতন রাস্তাগুলো নিমেষেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। আবার সারা দিনে একটি রাস্তায় একাধিক গাড়ি একটানা চলার কারণে ব্যাপক ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে। তাতে গ্রামের ছোট বড় সবাইকেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে শিশুসহ বয়স্কদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাটি ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব এলাকায় ফসলি জমিসহ নদীর পাড় থেকে দিন রাত মাটি বাণিজ্য করে আসছে। ভ‚মিদস্যু চক্রটি এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বাধা দেওয়ার সাহস পায় না। সাহস করে কেউ প্রতিবাদ করলেই চাঁদাবাজির মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি শিকার হতে হয় তাদের।

স্থানীয়রা জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা ভূমি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে নদীর পাড়, সমতল ভূমি এবং ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছে।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। যারাই অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //