দেবীগঞ্জে আবাসিক হোটেলে জিম্মি করে তিন লাখ টাকা লুট

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে আবাসিক হোটেলে বর্ডারকে জিম্মি করে রেখে তিন লাখ টাকা ও স্মার্ট ফোন লুটের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় আবু বক্কর সিদ্দিক নামে এক ব্যক্তি তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করে গত শনিবার (২০ মে) দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত শুক্রবার (১৯ মে) আবু বক্কর সিদ্দিক ও শাবলুর রহমান নামে দুই ব্যক্তি সন্ধ্যায় পুরাতন মাইক্রো ক্রয় করার উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে দেবীগঞ্জে আসেন। পরে তারা পৌর সদরের বন্ধন মোড় এলাকার করতোয়া আবাসিক হোটেলের ১০৩ নম্বর রুমে ওঠেন। রাতের খাবার খেতে চৌরাস্তা এলাকায় গেলে সেখানে পূর্বপরিচিত হাকিম নামে একজনের সাথে তাদের দেখা হয়। সেখানে আলাপ কালে হাকিম জানতে পারেন যে তারা মাইক্রো কেনার উদ্দেশ্যে দেবীগঞ্জে আসেন। হাকিম এই সময় মুঠোফোনে হেলাল ও মামুন নামে দুইজনকে ডেকে নেন।

পরে ওই ব্যক্তিদের খাওয়া শেষ হলে হাকিম ও তার সহযোগীরা এগিয়ে দেওয়ার কথা বলে হোটেল পর্যন্ত তাদের সাথে আসেন। বক্কর ও শাবলুরের সাথে হোটেলের রুমে প্রবেশের পর তারা রুমের দরজা ভেতর থেকে লাগিয়ে দেন এবং মুঠোফোনে আরও ৭/৮ জন সহযোগীকে ডেকে নেন। এরপর বক্কর ও শাবলুরের মুখে স্কচটেপ দিয়ে ও হাত-পা বেঁধে রাতভর বেধড়ক মারপিট শুরু করেন হাকিম ও তার সহযোগীরা। পরে তাদের কাছে থাকা তিন লাখ টাকা ও দুইটি স্মার্টফোন লুট করেন তারা। হাকিম ও তার সহযোগীরা সকাল পর্যন্ত হোটেলে ভুক্তভোগীদের আটকে রাখেন। পরে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ভুক্তভোগীদের ছেড়ে দিয়ে দ্রুত ঠাকুরগাঁওয়ে চলে যেতে হুমকি দেন তারা।

করতোয়া আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার রাজিব ইসলাম জানান, ঘটনার দিন হাকিম ও তার সহযোগীদের রাতে হোটেলে দেখেন তিনি। অভিযুক্ত হাকিম ভুক্তভোগীদের পূর্ব পরিচিত বলায় তাদের বিষয়ে কোন সন্দেহ হয়নি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ম্যানেজার হোটেলের মূল গেইটে তালা দিয়ে বাসায় যান।

পরিমল দে মার্কেটের নৈশ প্রহরী ত্যাজেন্দ্র নাথ বলেন, ওইদিন রাত আড়াইটার দিকে হাকিমের বেশ কয়েকজন সহযোগী এসে হোটেলে প্রবেশের বিকল্প পথ আছে কিনা জানতে চান। হোটেলের পেছনে একটি রাস্তা আছে বলায় সেদিক দিয়ে তারা হোটেলে প্রবেশ করেন। হোটেলে প্রবেশে বাধা দিলেও তারা শুনেননি। সর্বশেষ ভোর সাড়ে ৫টায় সেই নৈশপ্রহরী তাদের হোটেলের সামনে দেখেন বলে নিশ্চিত করেন।

সরেজমিন অনুসন্ধানে হোটেলের পেছনে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকানো অংশ ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পার্শ্ববর্তী এক দোকানদার বলেন, হোটেলের সামনে তাদের চলাফেরা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় স্থান ত্যাগ করার কথা বলা হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা তাকে ধমক দিয়ে দোকান বন্ধ করে বাসায় যেতে বলেন।

দেবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রনজু আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে হাকিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এর আগে ভুক্তভোগীরা আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ায় এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন তারা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Ad

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //