যমুনার অব্যাহত ভাঙনে স্কুলসহ শতাধিক ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে

যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে গত সাতদিনে সিরাজগঞ্জে চৌহালী উপজেলার ৩টি  ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের শতাধিক ঘর-বাড়ি, অসংখ্য গাছপালা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এরই মধ্যে অনেকেই গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টানিয়ে অতিকষ্টে বসবাস করছে।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো- বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চরনাকালিয়া, বিনানই, চরসলিমাবাদ, ঘোড়জান ইউনিয়নের ফুলহারা, মুরাদপুর, চরধীতপুর, উমারপুর ইউনিয়নের বাউশা, মিনিদা ও ধুবলিয়া গ্রাম।

অপরদিকে চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চরসলিমাবাদ গ্রাম সংলগ্ন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের ১৩১ নং সলিমাবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা ভাবনের আংশিক শনিবার সকালে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ বিদ্যালয়টি নাগরপুর উপজেলার মধ্যে হলেও সীমান্তবর্তী হওয়ায় এখানে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চরসলিমাবাদ গ্রামের অধিকাংশ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করেন। স্কুলটি ভেঙে যাওয়ায় এসব কমলমতি শিশুদের পড়ালেখা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।


এ বিষয়ে ১৩১নং সলিমাবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, এ বিদ্যালয়ে আগে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী ছিল। আশপাশের গ্রামগুলি যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এখন শিক্ষার্থী কমে ১৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, এ বিদ্যালয়ে মোট ছয়জন শিক্ষক রয়েছে। পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গত বছর ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০ ফুট লম্বা একতলা এ ভবনটি  নির্মাণ করা হয়। ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় শিশুদের পাঠদান ব্যাহত হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, এর আগে গত রবিবার পুরাতন ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, এ মাসের ৯ জুলাই পর্যন্ত বিদ্যালয় ছুটি আছে। ছুটি শেষে স্কুলটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে পাঠদান শুরু করা হবে।

এদিকে চৌহালীর খাষপুখুরিয়া হতে চর সলিমাবাদ পর্যন্ত নদীতীর সংরক্ষণ বাঁধের কাজ শুরু হয় ২ জুন। এর উদ্বোধন করেন, পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। উদ্বোধন এর ১৩দিনের মাথায় বাঁধ নির্মাণ

এলাকা থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ২ শ্রমিককে কারাদণ্ড ও বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। ফলে এ অংশে ভাঙনের তীব্রতা আরো বেড়েছে। অপরদিকে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের অপসারণ দাবিতে ১৫ ও ১৭ জুন এলাকাবাসী ওই বাঁধ নির্মাণ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।

এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করিনি। ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চৌহালী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ভাঙন রোধে অচিরেই জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //