প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্বে সরকারি বই বিক্রি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের লোহাখুচি দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন দুদুর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সরকারি বই কেজি দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পিয়ন ও সুইপার মিলে বিদ্যালয়ের একটি টিন সেট ঘর থেকে সরকারি বই বের করে বিদ্যালয় মাঠে সারিবদ্ধ করে রাখেন।

জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে বিদ্যালয় ছুটির দিন দুপুরে প্রধান শিক্ষক রুহুল বিদ্যালয়ের একটি টিনসেট কক্ষে গাদি গাদি করে রাখা বিভিন্ন সরকারি বই বিদ্যালয়ের পিয়ন ও সুইপারকে দিয়ে বের করে বিদ্যালয় মাঠে রাখেন। যা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মণ। পরে বিদ্যালয়ের কাছেই বসবাসরত জনৈক চানাচুর বিক্রেতা মমিনুল ইসলামের মাধ্যমে বইগুলো বিক্রি করেন। 

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত ২০২২ ও ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে মাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, ইসলাম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ক্যারিয়ার শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কৃষি শিক্ষা।

এদিকে ঘটনা এলাকাবাসীর কয়েকজন দেখে ফেললে তাদের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করেন। এর পরেও কয়েকজন বই বিক্রির সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে ঘটনা জানাজানি হয়। 

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন দুদু বই বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো সরকারি বই বিক্রি করিনি। সরকারি বইগুলো বিদ্যালয়ের কক্ষে রাখা হয়েছে। তবে তা দেখতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ব্যস্ততা দেখিয়ে সরে পড়েন। 

এছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নামে রয়েছে নানা অভিযোগ। বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের অভিযোগে জানা যায়, ২০২৩ সালে লোহাখুচি উচ্চ দ্বি-মুখী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুদু ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম খন্দকার মিলে চারজন কর্মচারী নিয়োগে অতি গোপনে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ৩০ লাখ  হাতিয়ে নিয়েছেন। এর আগে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম খন্দকার এর বিদ্যালয় কক্ষে জুয়া খেলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এসব বিষয়ে অভিভাবকরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসক, শিক্ষা অফিস লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্ত বলেন, কোন সরকারি বই প্রধান শিক্ষক বিক্রি করতে পারবে না। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় লোহাখুচি দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়রে বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অনেক দিন ধরে ওই বিদ্যালয়ের নিয়োগে অনিয়মের কথা শুনছি। সেখানে এসবের কোন প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনে নিয়োগ স্থগিত করা হবে এবং সরকারি বই বিক্রি বিষয়টিও খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //