দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আমন আবাদ নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

লক্ষ্মীপুরে আষাঢ় মাসে বৃষ্টির দেখা মিলেনি। ভাদ্র মাসের মাঝামাঝিতেও বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের সব বীজতলা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে চারাগাছ। বৃষ্টি না হওয়ায় আউশ উৎপাদনেও এর প্রভাব পড়েছে। চলতি বছর আমন ধান চাষাবাদ নিয়ে শঙ্কিত ধানচাষিরা।

সদর উপজেলার কয়েকজন কৃষক জানান, গত ২/৩ বছর যাবত আষাঢ়, শ্রাবণ এবং ভাদ্র মাসে বৃষ্টি কমে গেছে। সে জন্য কৃষকরা নিদিষ্ট সময়ে আমন রোপণ করতে পারছে না। কৃষকরা এ বছর নিচু জমিতেও এখন পর্যন্ত আমন রোপন করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামের কৃষক নুরুল আমিন জানান, তিনি ৬০ শতক জমিতে ব্রি ৫২ জাতের ৬০ কেজি ধানের বীজতলা বসিয়েছেন। চারাও ভালো গজিয়েছে। এখন জমিতে রোপণের সময়। কিন্তু বৃষ্টি না থাকার কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার বীজতলার চারপাশে কোথাও পানি নেই। 

রায়পুর উপজেলার কানিবগার চরে দেশীয় জাতের ধানের চাষ হয়। এবার বেশির ভাগ জমি ফাঁকা। কানিবগার চরের নারী কৃষক স্বপ্না আক্তার জানান, চলতি বছর বৃষ্টি না থাকায় ধানের বীজ মরে গেছে। কিছু জমিতে ধান গাছ দেখা গেলেও সেগুলোর অবস্থা ভালো নেই। প্রখর রোদে চরের বুকে দেশীয় জাতের ধানের গাছও পুড়ে মরে যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা, রায়পুর, রামগতি এবং কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানি না থাকায় বেশির ভাগ জমি অনাবাদি হিসেবে পড়ে আছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের আমন বীজতলাগুলো প্রখর রোদে হলুদ বর্ণ ধারণ করতে শুরু করেছে। এসব বীজতলার চারা রোপণ করলে পর্যাপ্ত ফলন নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

রামগতির কৃষক সুমন হাওলাদার জানান, আষাঢ় থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত আমন ধানের চারা জমিতে রোপণ করা হয়। কিন্তু এবার তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় তারা আমন চাষাবাদ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের লক্ষ্মীপুরের রামগতি অফিসের আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর জুলাই মাসে লক্ষ্মীপুরে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি কম হয়েছে। এ বছর জুলাই মাসে লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি হয়েছে ১৩১ মিলিমিটার। কিন্তু গত বছর এ সময়ে বৃষ্টি হয়েছে ১৭৬ মিলিমিটার। অন্যদিকে ফসলের জন্য মুষলধারে বৃষ্টি প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন জানান, এ বছর বৃষ্টির কারণে আমন উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন পর্যবেক্ষণ করে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সেচ যন্ত্রগুলো চালু করণের জন্য বিএডিসিকে জানানোর কথা বলেন তিনি। অন্যদিকে খরায় করণীয় বিষয়ে কৃষকদের জন্য নানা পরামর্শ দেয়ার কথাও জানান এই কর্মকর্তা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //