বরিশালে শিশুকে পাশবিক নির্যাতন,পাঁচ হাজার টাকায় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা

দাওয়াত করে ঘরে ডেকে নিয়ে আট বছর বয়সী শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের (বলাৎকার) অভিযোগ উঠছে প্রতিবেশী প্রায় পঞ্চাশ বছর বয়সী চাচা নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তবে জানাজানি হলে মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় ঘটনাটি পারিবারিকভাবে ধামাচাপা দেন তিনি।

তবে অসুস্থতাজনিত কারণে বুধবার বেলা পৌনে ১টার দিকে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রকাশ্যে আসে নির্যাতনের ঘটনা। বর্তমানে শিশুটিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অস্থায়ীয় নারী ও শিশু আদালত ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে এবং একইদিন সন্ধ্যায় দুই দফায় বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের সাতানি এলাকার ময়দান সংলগ্নে নিজ বাড়িতে শিশুটিকে ডেকে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করেন নিজাম উদ্দিন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে শিশুটির ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

শিশুর মা জানান, বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকার একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করতো তার শিশুপুত্র। অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যার লেখাপড়া। একারণে বাড়িতেই থাকে সে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পাশে একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াত খেতে যায় শিশুটি। সেই সুযোগে দুপুরে বিভিন্ন অজুহাতে শিশুটিকে নিজের ঘরে ডেকে নেয় নিজাম। পরে তাকে বলাৎকার করেন তিনি।

নির্যাতনের শিকার শিশু জানায়, একইদিন সন্ধ্যায় রাতের খাবার খাওয়ানোর কথা বলে শিশুটিকে ঘরে ডেকে নেয় নিজাম। দ্বিতীয় দফা নির্যাতনের চেষ্টা করলে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে পালাবার চেষ্টা করে শিশুটি। তখন নিজাম তার হাত ও মুখ চেপে ধরে। এরপর ঘর থেকে বের হয়ে সামনের দরজা আটকে দেয় নিমাজ। পরে পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে শিশুটিকে মেরেফেলার হুমকি দিয়ে দ্বিতীয় দফা নির্যাতন করেন তিনি। নির্যাতন শেষে আমাকে ভাত খাইয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেয়।

নির্যাতিত শিশুর মা বলেন, মঙ্গলবার সকালে প্রথমে নির্যাতন করে। সেই কথা আমাকে আমার ছেলে বললে বিশ্বাস করিনি। তারপর আবার সন্ধ্যায় ভাত খাওয়ার কথা বলে নির্যাতন করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে নিজাম ও তার পরিবারের লোকেরা আমাদের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরে বিষয়টি আমরা কাউকে জানাইনি। ছেলে নিতম্বে ব্যথা অনুভব করলে বুধবার দুপুরের দিকে তাকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানকার চিকিৎসকরা ঘটনা শোনার পরে তারা আমার শিশু সন্তানকে ওসিসিতে ভর্তি করে দেন।

শিশুর মা বলেন, আমরা ক্ষতিপূরণ চাইনি। তারাই জোর খরে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। আমরা চাই এই ঘটনার বিচার হোক। আজকে আমার ছেলের সঙ্গে করেছে সামনে অন্যের সঙ্গে করবে না তার নিশ্চয়তা কি আছে। তাই এ নিয়ে মামলা করবেন বলে জানান তিনি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রহমান মুকুল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তবে আগে এই বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। হাসপাতালে শিশুটি ভর্তি হয়েছে শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //