বিএসএফের বাধা: থমকে আছে ফেনী নদী রক্ষা প্রকল্প

ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ফেনী নদী। নদীর খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা ও রামগড়ের একাধিক অংশে ভাঙন রোধে একাধিক প্রকল্প নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত করা যাচ্ছে না। প্রকল্প অনুযায়ী কয়েক বছর আগে সিসি ব্লক নির্মাণের কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে ভারতীয় বিএসএফের বাধার কারণে নদীতে ব্লক ডাম্পিং ও প্লেসিং করা যাচ্ছে না জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

সরেজমিনে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলার অযোধ্যা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় নদী পাড়ে প্রস্তুতকৃত শত শত সিসি ব্লক পড়ে আছে। নদীতে ডাম্পিং ও প্লেসিং করতে না পারায় সিসি ব্লকের ওপর ঘাস উঠে গেছে। বিএসএফের বাধার কারণে নতুন কোনো ব্লকও বানানো যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোডের্র সূত্রে জানা যায়, সীমান্ত নদী তীর সংরক্ষণ ও উন্নয়নের (২য় পর্যায়) আওতায় ৬টি প্যাকেজে মাটিরাঙার অযোধ্যায় ফেনীর নদীর প্রায় ৮০০ মিটার, শান্তিপুর এলাকায় ৪০০ মিটার, দেওয়ান বাজার এলাকায় ৩০০ মিটার, লক্ষ্মীছড়া এলাকায় ৫০০ মিটার, করইল্যাছড়া এলাকায় ১১৫০ মিটার এলাকার নদীর ভাঙন রোধে প্রকল্প নেওয়া হয়। এছাড়া আলাদা ৩টি প্যাকেজে মাটিরাঙার তাইন্দং এলাকায় প্রায় ফেনীর নদীর ২৫০ মিটার, করইল্যাছড়া এলাকায় ২৫০ মিটার এবং রামগড়ে মহামুনি-সোনাইপুর এলাকায় ৪০০ মিটার এলাকা ভাঙন রোধে সেøাপিং, সিসি ব্লক ডাম্পিং ও প্লেসিংয়ের প্রকল্প নেওয়া হয়। এসব প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। তবে ভাঙন রোধে প্রকল্প নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। 

ফেনী নদীর তীরবর্তী বেলছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। বেলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রহমত উল্ল্যাহ জানান, আমার ৭নং ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকায় কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ব্লক বানানোর কাজ শেষ হলেও বিএসএফের বাধার কারণে ব্লক বসানো যাচ্ছে না। সীমান্ত নদী তীর সংরক্ষণ ও উন্নয়নের (২য় পর্যায়) ঠিকাদার এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা জানান, দরপত্রের শর্তানুযায়ী গুণগত মান বজায় রেখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিসি ব্লক নির্মাণের কাজ শেষ করি। কিন্তু যখনই এসব ব্লক নদীতে প্লেসিং করতে গেছি তখন বিএসএফের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তারপরও দুই বছর ধরে প্রকল্পটি ঝুলে আছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারায় ইতোমধ্যে আমার প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

সীমান্ত নদী তীর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্পের পরিচালক নবকুমার চৌধুরী বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো গাফিলতি নেই। যে ৯টি প্যাকেজের কাজ বন্ধ রয়েছে তা চালু করার জন্য গত মাসের ২৩-২৪ তারিখে ভারতের নয়াদিল্লিতে যৌথ নদী কমিশনের সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আশা করি ছাড়পত্র আমরা পেয়ে যাব। এরপরই কাজ শুরু হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //