অভিযানেও থামছে না যমুনায় বালু উত্তোলন

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা ও এনায়েতপুরে যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে। প্রকাশ্যে চলছে লাখ লাখ ঘনফুট অবৈধ বালু উত্তোলন। এ নিয়ে নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়রা মিলে বাল্কহেডসহ বালু দস্যুদের ধরে পুলিশে দিয়েছে। তারপরও যমুনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন থামছেই না।

এদিকে, উপজেলা প্রশাসন বলছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বালু উত্তোলনকারীদের দণ্ড দেওয়া হচ্ছে। জানা যায়, যমুনার পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে নদীর ভাঙনে বিশাল এলাকা বিধ্বস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দুই পাড়েই বাঁধ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ সাময়িকভাবে মন্থরগতিতে চলছে। যমুনা নদীতে সুযোগ বুঝে এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা সংঘবদ্ধ হয়ে চৌহালী উপজেলা ও এনায়েতপুর থানার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বালু তুলছে। এতে সরকার একদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে। অপর দিকে নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক দিন দিন বাড়ছে।

এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ফজলু ব্যাপারী, খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়ের হোসেনসহ প্রভাবশালী বালু দস্যু চক্র দীর্ঘ দিন ধরে যমুনা নদীর বিভিন্ন স্পট থেকে বালু তুলে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। এই সুযোগে দিনে ও রাতে বালু তুলে স্থানীয় বিভিন্ন ভিটেবাড়ি ভরাটসহ আরিচা, ফরিদপুর ও দূর-দূরান্তে আস্তর বালু সরবরাহ করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।

অপর দিকে কতিপয় কর্তাকে দিচ্ছেন আর্থিক সুবিধা এমন অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সম্প্রতি এনায়েতপুরের কোচগ্রামে দুটি বাল্কহেডসহ বালু দস্যুদের ধরে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া কয়েক দিন আগে চৌহালী উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এক বালু ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এরপর আবার বালু উত্তোলন কার্যক্রম চালু করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ফজলু ব্যাপারী বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে আমরা কেউ জড়িত না। এলাকাবাসী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের নাম বলেছে।

খাষপুখুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি খায়ের হোসেন জানান, বর্ষায় টুকরি দিয়ে কিছুদিন ব্যবসা করেছি। কয়েক দিন রাস্তা ও মসজিদের কাজে মাটি দিয়েছি। এখন অন্যরা করে আমি কিছুই জানি না।

চৌহালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ ফারুক আহমেদ জানান, বালু দস্যুদের চিনি না। খোঁজ নিয়ে এই চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, চৌহালীতে সরকারি কোনো বালু মহাল নেই। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //