ভেঙে গেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, জেলা প্রশাসনের সতর্কতা জারি

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিকিম রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার পানির তোড়ে উজানের একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। উজান থেকে কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবল বেগে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে পানি।

আজ বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার মাত্র ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরআগে দুপুর ১২টায় একই পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার নিচে। ৩ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৭০ সেন্টিমিটার। ইতোমধ্যে পানি প্রবেশ করেছে তিস্তা চারাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায়।

যেকোনো মুহূর্তে বিপৎসীমা অতিক্রম করে বড় ধরনের বন্যা হতে পারি বলে আশঙ্কা করছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। 

এদিকে জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেইজে সতর্ক বার্তা জারি করেছে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক।

জানা গেছে, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা অংশে বাঁধ ভেঙে যায়। কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবল বেগে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে পানি। বুধবার বিকাল থেকেই পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে রাতে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হতে পাড়ে বলে আশঙ্কা করছে তিস্তার পাড়ের মানুষজন। এমতাবস্থায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কার কথা জানিয়েছেন বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

লালমনিরহাট বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের (সিডব্লিউসি) তথ্য অনুযায়ী, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম নামক একটি বাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও সিকিম অঞ্চলে  আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে রংপুর অঞ্চলসহ লালমনিরহাট, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম এলাকায় রাত থেকেই বৃষ্টি চলছে।

তিস্তার বাম ও ডান তীরের নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে মৌসুমী ফসলসহ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে সতর্কবার্তা দিয়ে বন্যা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। এছাড়াও মাইকিং করে নিরাপদ আশ্রয় নিতে ও প্রস্তুতি নিতেও বলা হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, আমরা নদী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাইকিং করে নদী এলাকার মানুষকে সচেতন করতে বলেছি। সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের লোকজনদের পশুপাখিসহ প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ভারী ঢলে তিস্তায় আবারো বন্যা দেখা দিতে পারে। আমরা সার্বিক খোঁজখবর রাখছি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //