বিপৎসীমার ২৫ সে.মি ওপরে তিস্তার পানি

উত্তরাঞ্চলের ৫ জেলায় বন্যার শঙ্কা

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিকিম রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার পানিতে উজানের একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। উজান থেকে প্রবল বেগে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে পানি। এতে বন্যায় উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

আজ বুধবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই পয়েন্টে বিকেল ৩টায় বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরও আগে দুপুর ১২টায় পানি প্রবাহ ছিল বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার নিচে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে রাত পর্যন্ত বিপৎসীমার ৫০ সে.মি. উপর পর্যন্ত উঠতে পারে বলে ধারণা করছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।

ইতোমধ্যে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে জেলার তিস্তা চারাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার ৫ হাজার পরিবার। বড় ধরনের বন্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তিস্তা পাড়ের মানুষ।

এদিকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেইজে সতর্ক বার্তা জারি করেছে জেলা প্রশাসক। এছাড়াও মাইকিং করা হচ্ছে তিস্তা চারাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকায়।

ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা অংশে বাঁধ ভেঙে যায়। প্রবল বেগে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে পানি।  এমতাবস্থায় ভয়াবহ বন্যার শঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের (সিডব্লিউসি) তথ্য অনুযায়ী, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম নামক একটি বাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে রংপুর অঞ্চলসহ লালমনিরহাট, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম এলাকায় রাত থেকেই বৃষ্টি চলছে। রাত পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সে.মি. উপর পর্যন্ত উঠতে পারে। তিস্তার বাম ও ডান তীরের নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে মৌসুমী ফসলসহ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে সতর্কবার্তা দিয়ে বন্যা মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। 

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, আমরা নদী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাইকিং করে নদী এলাকার মানুষকে সচেতন করছি। সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের লোকজনদের পশুপাখিসহ প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ভারী ঢলে তিস্তায় আবারো বন্যা দেখা দিয়েছে। আমরা সার্বিক খোঁজখবর রাখছি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //