মাটি পরীক্ষা আর প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ ব্রিজ নির্মাণ

বছরের পর বছর মাটি পরীক্ষা আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণের প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে ব্রিজ নির্মাণ। এদিকে একটি ব্রিজের অভাবে দীর্ঘদিন থেকে লালমনিরহাটের আদিতমারী ও কালিগঞ্জ উপজেলার তিন ইউনিয়নের অর্ধ লাখ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত একযুগে একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থলে এসে মাপযোগ ও মাটি পরীক্ষার করেছে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ কয়েকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে ব্রিজ নির্মাণের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষতুলি এলাকার মালদাহ নদীর উপর ব্রিজ না থাকায় নৌকা যোগে পাড় হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ গ্রামের মানুষজন। কৃষকরা নদী পাড় করছে তাদের আবাদি ফসল।

জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি, ফলিমারী, দুলালী এলাকা ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর, উত্তর গোবধা, শঠিবাড়ী এবং পার্শ্ববর্তী উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচী এলাকার মানুষজন নিয়মিত চলাচল করেন মহিষতুলি এলাকার ওই মালদা নদীর উপর দিয়ে। নদীতে ব্রিজ না থাকায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষের। শুষ্ক মৌসুমে নৌকা যোগে নদী পাড় হলেও বর্ষা মৌসুমে পড়েন তারা বিড়ম্বনায়। নদীর প্রবল স্রোতে নৌকায় পাড় হতে কষ্ট ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর দাবি, ওই মালদা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ হলে চলাচলে সুবিধার পাশাপাশি পুরো এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।


স্থানীয় বাসিন্দা জমসের আলী বলেন, ব্রিজ না থাকায় চলাচলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। কৃষকদের ফসল পারাপারেও হচ্ছে ভোগান্তি। মহিষতুলির বাসিন্দা রমনি কান্ত (৫৫) বলেন, ব্রিজ না থাকায় অনেক কষ্টে চলাচল করতে হয়। শুনে আসছি ব্রিজ হবে, কিন্তু বুড়ো হয়ে গেলাম, ব্রিজ আর হলো না। দুলালী এলাকার জেলে খোরশেদ আলম বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এলজিইডির লোকজন এসে মাটি পরীক্ষা ও মাপামাপি করে গেছেন কিন্তু ফলাফল শূন্য। লোহাকুচী থেকে সঠিবাড়ী যাতায়াত কারী রহমত বলেন, ছোটবেলা থেকে প্রয়োজনীয় কাজে যাতায়াত করতে হয় এই রাস্তা দিয়ে। কিন্তু নদীতে ব্রিজ না থাকায় অনেক কষ্ট হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। তখন ২৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। সঠিবাড়ী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, নদীর একপাশে দুটি বিদ্যালয় ও অপর পাশে মাদ্রাসা রয়েছে। শিক্ষার্থীসহ এই পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যা-তায়াত করে। ব্রিজটি নির্মাণ হলে চলাচলে দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে দাবি তার।

তবে জনগণের ভোগান্তি নিরসনে স্থানীয় সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সম্প্রতি আবারো মহিষতুলিতে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সুপারিশ পত্র দিয়েছেন জানিয়ে এলজিইডির আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাইদুল ইসলাম প্রকৌশলী বলেন, মহিষতুলির মালদহ নদীতে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //