বাঁশের সাঁকো বেয়ে উঠতে হয় ৭ কোটি টাকার ব্রিজে

ব্রিজ আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক নেই। তাই প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো বেয়ে। ব্রিজ নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় এলাকাবাসী নিজ  উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে তৈরি করে ওই সাঁকোটি।

জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কেশরঘাট এলাকার সতী নদী যুগের পর যুগ বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হতো দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবীর পেক্ষিতে এক বছর পূর্বে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ভূমি জটিলতা অজুহাতে নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। এতে ভোগান্তিতে ভোগান্তিতে পড়েছে দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৫ মার্চ ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে কেশরঘাটে ব্রিজ নির্মাণ কাজ সরু হয়। যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। সময় অনুযায়ী ৮১ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজের কাজ শেষ হলেও ভূমি জটিলতার কথা বলে নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ।

স্থানীয়রা জানায়, কেশরঘাটে দীর্ঘ দিনের দাবির পেক্ষিতে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল ভোগ করতে পারছেন না এলাকাবাসী। ব্রিজের সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হলে দুই ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হবে। খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুস সালাম (৫৫) বলেন, কেশরঘাট হয়ে জেলা শহরে যেতে যুগের পর যুগ বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে পারাপার হতে হতো। বর্ষাকালে ভোগান্তি আরো বেশি পোহাতে হতো। জনগণের ভোগান্তি নিরসনে সরকার একটি ব্রিজ নির্মাণ করে দিলেও যাতায়াতের উপযোগী না হওয়ায় ভোগান্তি সমাপ্তি হয়নি।

জেলা শহর থেকে কেশরঘাট হয়ে বাড়ি ফেরা মোটরসাইকেল আরোহী মাসুক ইসলাম (৩০) বলেন, ব্রিজ হলে শেষ হয়নি সংযোগ সড়কের কাজ। এতে পূর্বের মতোই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কেশরঘাট ব্যতীত জেলা শহরে যেতে প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। ফলে সময় ও ব্যয় বেশি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ভ্যানচালক আলতাফ হোসেন (৪০) বলেন, বাঁশের সাঁকো থাকাকালীন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হতো। বর্তমানে ব্রিজ আছে তবে রাস্তা নেই। তাই ঝুঁকিও কমেনি।

হারাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক খয়বর আলী (৪৫) বলেন, জনগণের সুবিধার জন্য ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে। ব্রিজের দুই পাশে সড়ক নির্মাণের কাজ হলে ব্রিজের অপর পাশে থাকা জমির ফসল বাজারজাত করণে সুবিধা হবে।

ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি শাহাজামাল বলেন, নির্ধারিত সময়ে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে ভূমি জটিলতা থাকায় সংযোগ সড়কের কাজ হয়নি। শিগগিরই সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান হাসান (পিএমপি) বলেন, সম্প্রতি ভূমি জটিলতা সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। ব্রিজের দুইপাশে সংযোগ সড়ক কাজ শুরু করা হবে। দ্রুতই যোগাযোগের জন্য উপযোগী হবে ব্রিজটি। ব্রিজটি দিয়ে চলাচল শুরু হলে উপজেলার দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //