পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যুবদল নেতার হাত-পা ভেঙে দিল দুর্বৃত্তরা

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে এক যুবদল নেতাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে হাতুড়িপেটা করে হাত-পা ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

গতকাল রবিবার (১২ নভেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার রামশাকাজিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সজীব হোসেন (৩২) রামশাকাজিপুর হাজিপাড়া গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে। তিনি বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়নের ১ ওয়ার্ড শাখা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।

গত ১৬ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নাটোরের বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের ওপর এ ধরনের অন্তত আটটি হামলার ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নলডাঙ্গা উপজেলাতেই পাঁচটি ঘটনা ঘটেছে।

নলডাঙ্গা থানা–পুলিশ ও ভুক্তভোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে সজীব হোসেন রামশাকাজিপুর ডা. নাছির উদ্দিন তালুকদার উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের চায়ের স্টলে ক্যারম খেলছিলেন। এসময় সাদা মাইক্রোবাসে হেলমেট পরা ছয় থেকে সাতজন লোক সেখানে আসে। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয়ে সজীবকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়। অচেতন অবস্থায় আধা কিলোমিটার দূরে নলডাঙ্গার একটি সড়কের পাশে তাকে ফেলে দুর্বৃত্তরা চলে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নলডাঙ্গার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। স্বজনেরা সেখানে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

আবদুল করিম নামের এক পথচারী বলেন, তিনি অপরিচিত এক যুবককে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে আরো লোকজন জড়ো হলে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। যুবকটি হাত-পা নাড়াতে পারছিলেন না বলেও জানান তিনি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সজীব হোসেনের সঙ্গে আছেন তার ছোট ভাই সবুজ হোসেন। আজ সোমবার মোবাইল ফোন তিনি বলেন, হাসপাতালে আনার পর এক্স–রে করা হয়েছে। এতে দুই পা ও বাঁ হাতের হাড় ভাঙা ধরা পড়েছে।

নলডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নব্বইয়ের দশকে আত্মগোপনে থাকা একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা এই এলাকায় যেমন নির্যাতন চালিয়েছে, ঠিক তেমন ঘটনা ঘটছে এখন। একটু চেষ্টা করলেই পুলিশ তাদের শনাক্ত করতে পারে, কিন্তু তারা তা করছে না। মনে হচ্ছে দুর্বৃত্তরা গ্রেপ্তার হবে না, এমন নিশ্চয়তা পেয়েই একের পর এক নৃশংস ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে।

নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। কে বা কারা সজীব নামের একজনকে পিটিয়ে ফেলে রেখে গেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, পুলিশের কেউ এ ঘটনার সময় ঐ এলাকার যায়নি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //