বহিরাগতদের হামলার পর ফাঁকা বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে ঢুকে বহিরাগতদের সশস্ত্র হামলার ঘটনায় গত তিনদিনেও মামলা হয়নি। বরং পুনরায় হামলার শঙ্কায় হল ছেড়েছে শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী হল ছেড়েছে। ক্যাম্পাসে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কদিন আগেও শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখোর থাকা ক্যাম্পাসটি এখন একেবারেই ফাঁকা।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকায় বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। হামলায় আহত ১৫ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম অনুসারীরা এ হামলা করেছে।

বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিভিল তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাইমুন বলেন, গত ১৩ নভেম্বর বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হোস্টেলে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। কুপিয়ে জখম করে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি পক্ষের সমর্থন করায় আমাদের মতো শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে আছে।

আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরের দিকে হল ছাড়তে দেখা যায় ইলেকট্রিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শফিক, রাফি, সজল এবং সোয়ানসহ কয়েকজনকে। তারা যশোর, খুলনা এবং সাতক্ষীরার বাসিন্দা। আলাপকালে শিক্ষার্থী শফিক বলেন, কলেজটিতে ৬টি ব্যাচে পাঁচশত শিক্ষার্থী রয়েছে। ১৩ নভেম্বর রাতের ঘটনার পর থেকে সবাই আতঙ্কে আছে। যেকোনো সময় আবার হামলার শঙ্কা রয়েছে। তাই ঘটনার পর দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। আমরা যারা ছিলাম তারাও আজ (বুধবার) চলে যাচ্ছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাসে ফেরার কথা জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ খলিল উদ্দিন বলেন, হামলার ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ মামলা করবে না। যারা হামলার শিকার তারা আইনি প্রক্রিয়ায় যাবে কী-না সেটা তাদের বিষয়। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। কিন্তু তার পরও শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় হল ছাড়ছে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থী না থাকায় কলেজের পাঠদান আপাতত বন্ধ রয়েছে। পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনা যাবে সে বিষয়টি আমি নিশ্চিত নই। তাই ভার্চুয়ালি ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কী-না সে বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষার্থীদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন মামলা বা লিখিত অভিযোগ পাননি তারা।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার বিষয়টি শুনেছি। তবে হল ছাড়ার মতো পরিস্থিতি ক্যাম্পাসে তৈরি হয়নি। পুনরায় হামলা হতে পারে এমন কোনো শঙ্কা আমরা দেখিছি না। তাছাড়া ক্যাম্পাসে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এখনো পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //