ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত স্কুল, খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ভবন নির্মাণের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর। 

গত শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি। এতে বিদ্যালয়ের পাশাপাশি, পাকা ধান, ঘরবাড়ি ও অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেদিনের ঝড়ে উড়ে যায় সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের পশ্চিম চরজুবলী গ্রামে অবস্থিত আবদুল মালেক উকিল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরপর থেকে খোলা আকাশের নিচে তাদের ক্লাস চলছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। শিক্ষাবর্ষের শেষ সময়ে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বার্ষিক পরীক্ষা কার্যক্রমও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভিন আক্তার বলেন, শুক্রবার ঝড়ে আমাদের ধানের জমি ও বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয়েছে। সকালে গিয়ে দেখি স্কুলটাও নেই। ঝড়ে আমাদের স্কুল উড়ে গেছে। খোলা মাঠে ক্লাস করছি। সামনে আমাদের পরীক্ষা। 

ফাতেমা নামের আরেক শিক্ষার্থী জানান, সামনে আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আমাদের সামনের দিন গুলো নিয়ে শঙ্কায় আছি। ভবন নির্মাণ না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে অসুবিধা হচ্ছে। রোদ আর গরমে বসে থাকা যায় না। আমাদের একটা স্থায়ী ভবন চাই।

অভিভাবক ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পুরো স্কুলটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা। তাই এখন শিক্ষার্থীদেরকে খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. পারভেজ বলেন, এই চরাঞ্চলের শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য ২০০৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। যার নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আবদুল মালেক উকিলের নামে। আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ঝড়ে পুরো বিদ্যালয় উড়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে অনিরাপদ পাঠদান চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে সহযোগিতা চেয়েছি। যেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পাঠদানে অংশ নিতে পারে।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক স্পিকার মরহুম মালেক উকিলের পুত্র ও সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার উদ্দিন খেলন বলেন, আমি ঊর্ধ্বতনকে অনুরোধ করছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য এবং শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ভবন নির্মাণ করার জন্য। সেই সাথে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণেরও দাবী জানান তিনি। 

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আল আমিন সরকার বলেন, শিক্ষা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি দেখা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //